টকশোতে হাস্যকর মন্তব্য করেছেন তিন মূর্খ সাংবাদিক: তসলিমা নাসরিন
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিতে প্রচারিত ‘একাত্তর জার্নাল’ নামে টকশো অনুষ্ঠান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সোমবার (০৭ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েট ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
অনুষ্ঠানে টকশোর উপস্থাপিকা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও আরও দুইজন নারী অতিথি যুক্ত ছিলেন।
ফেসবুক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘‘একাত্তর টিভিতে তিন মূর্খ মহিলা-সাংবাদিক একজন কৃষিবিজ্ঞানীর নতুন গবেষণা নিয়ে যেসব হাস্যকর, বিরক্তিকর, অশালীন, অশ্লীল, উদ্ভট মন্তব্য করেছেন, এবং গবেষককে যেভাবে অপমান আর অপদস্থ করেছেন তা দেখে হতবাক হয়ে গেলাম।
বাংলাদেশ বলেই বোধহয় এমন গণ্ডমূর্খের দল শুধু সরকারের চাটুকারবৃত্তিতে পারদর্শিতার গুণে নানা প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্থানে বসার সুযোগ পেয়েছেন। বিজ্ঞান সম্পর্কে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে, গবেষণাপত্র প্রকাশ সম্পর্কে যাঁদের ন্যূনতম জ্ঞান নেই, তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গবেষকের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে!
আরও পড়ুন: টকশোতে গবেষককে হেনস্থাকারীদের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে হবে
একাত্তর টিভির উচিত ছিল গবেষকের নতুন গবেষণা নিয়ে আলোচনা করার জন্য গবেষণা সম্পর্কে সম্যক ধারণা আছে এমন একজন বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানমনস্ক কোনও জ্ঞানী ব্যক্তিকে নির্বাচন করা।
আজকাল টেলিভিশনে এমন হয়েছে, ঘটে দু’ছটাক বুদ্ধি নেই, এমন মেয়েদেরও টিভি ক্যামেরার সামনে কিছু বুলি শিখিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় যাদের সম্বল বলতে সুন্দর নাক চোখ মুখ, সুন্দর পোশাক আশাক, সুন্দর দেহসৌষ্ঠব।
তারাই খবর পড়ে, তারাই রাজনীতিকের সঙ্গে আলোচনায় বসে, তারাই বিজ্ঞানীকে প্রশ্ন করে, অর্থনীতি বিষয়ে জ্ঞানদান করে, শিল্প সাহিত্য নিয়ে মত প্রকাশ করে। জনগণ এদের দেখছে প্রতিদিন, এরাই হয়ে উঠছে জনপ্রিয়, এরাই হয়ে উঠছে বরেণ্য বুদ্ধিজীবী। দেশ যখন রসাতলে যায়, এভাবেই যায়।’’
এদিকে, এ টকশো অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জাকিরকে হেনস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতি। একইসঙ্গে বিবৃতিতে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও।