টকশোতে গবেষককে হেনস্থা, বাকৃবি ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতিবাদ
সম্প্রতি একাত্তর টেলিভিশন আয়োজিত একাত্তর জার্নালের একটি টকশোতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনকে তার গবেষণামূলক কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাকৃবির আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতি। আজ রবিবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালের নীল দল এবং কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির স্ব স্ব প্রতিবাদলিপিতে ওই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে জানানো হয়, গত ২ নভেম্বর একাত্তর টেলিভিশনে আয়োজিত একাত্তর জার্নালের একটি টকশোতে বাকৃবির গবেষক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালকসহ অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথি দ্বারা অশোভন ও আক্রমণাত্বক আচরণ এবং প্রক্রিয়াধীন গবেষণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। টকশোতে গবেষকের গবেষণামূলক কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করায় কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতি হতবাক ও মর্মাহত হয়েছে। একাত্তর টেলিভিশনের ঐ সাংবাদিকদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে ক্ষমা চাওয়া এবং গবেষণা সম্পর্কিত সঠিক প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছে কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতি।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, অধ্যাপক ড. জাকিরের গবেষণা দল কিন্তু কখনো বলেননি যে বেগুন খেলে ক্যান্সার হবে। কিন্তু একাত্তর টেলিভিশনের ওই টকশোতে উপস্থাপকসহ আরও দু’জন সাংবাদিক যেভাবে তাঁকে জেরা করলেন তা কোনক্রমেই শিষ্টাচারের পর্যায়ে পড়ে না। ওই সাংবাদিকরা সাইন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালটির মান, প্রকাশক, কিভাবে গবেষণা হয়, কিভাবে জার্নালে প্রকাশ করতে হয় ইত্যাদি সম্মন্ধে ন্যূনতম জ্ঞানও রাখেন না বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ বিশ্বখ্যাত জার্নালে বাকৃবির কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বেগুনে ভারী ধাতুর উপস্থিতি শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। ড. জাকির বেগুন নিয়ে যে গবেষণা করেছেন যেটি সাদা চোখে খুবই সাদামাটা একটি গবেষণা মনে হলেও মানব দেহের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিলে গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় জামালপুরের জেলার কিছু এলাকার চাষকৃত বেগুনে কয়েকটি ভারী ধাতু যেমন- লেড, ক্যাডমিয়াম এবং নিকেলের উপস্থিতি পেয়েছেন যা মানবদেহের সহনীয় মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় রয়েছে। এসব ভারী ধাতু ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতিরিক্ত মাত্রায় এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি মানব শরীরের জন্য হুমকিস্বরূপ ও মরণব্যাধি রোগ ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ তৈরি করতে সক্ষম।