ফোন কিংবা ফেসবুক— কিছুই না থাকা মুনিয়ার মেডিকেলে চান্সের প্রেরণা বড় বোন
২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় ১৫৫তম স্থান অর্জন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তাবাসসুম শামস মুনিয়া। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ে তিনি পড়ালেখায় মনোযোগ ধরে রাখতে তিনি কোনো ফোন বা ফেসবুক ব্যবহার করেননি। ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষে তার বড় বোন সুমাইয়া শামস রুহি সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। বড় বোনের সেই সাফল্যই মুনিয়ার মেডিকেলে পড়ার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।
মুনিয়া শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পাস করেন। প্রকৌশলী মো. শামস ই রাব্বী ও গৃহিণী মোর্শেদা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান তিনি। তার বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার মধ্য শেরি উত্তর শিংপাড়া এলাকায়।
নিজের প্রস্তুতির গল্প জানাতে গিয়ে মুনিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তবে বাবা–মা চাইতেন আমি যেন ডাক্তার হই। ২০২০ সালে বড় বোন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর পরিবারে দুইজন ডাক্তার থাকলে ভালো হবে—এমন ভাবনা থেকেই আমার ডাক্তারি পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়।
পড়াশোনার কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, খাওয়া ও ঘুমের সময় ছাড়া প্রায় পুরো সময়ই পড়াশোনার মধ্যেই কাটিয়েছি। মূল পাঠ্যবইয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে তার নিজস্ব কোনো মোবাইল ফোন বা ফেসবুক ব্যবহার করিনি। প্রয়োজন হলে মায়ের ফোন ব্যবহার করে যোগাযোগ করতাম।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, গবেষণামুখী চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার। বিশেষ করে ক্যান্সারের মতো জটিল ও দুরারোগ্য রোগ নিয়ে গবেষণা করে কার্যকর প্রতিষেধক উদ্ভাবনের স্বপ্ন দেখেন তিনি, যাতে দরিদ্র মানুষ সহজে এসব রোগের চিকিৎসা পেতে পারে।
মুনিয়ার মা মোর্শেদা বেগম বলেন, আমার তিন সন্তানই শান্ত স্বভাবের এবং পরিবারের কথার বাইরে কোনো কাজ করে না। বড় মেয়ে মেডিকেলে পড়ছে, এবার ছোট মেয়েও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ছোট ছেলেকেও ডাক্তার বানানোর ইচ্ছা। সন্তানদের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করি।