২০২২ থেকে ২০২৫—চার বছরে একই কলেজ থেকে মেডিকেলে চান্স ২২৪ শিক্ষার্থীর
দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ৪৪ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এ তথ্য জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে গত চার বছরে এই কলেজ থেকে মোট ২২৫ জন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী কলেজটি থেকে ৫০ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে থাকে এবং কখনো কখনো মেধা তালিকায় শুরুর দিকেই থাকে। কলেজটি থেকে গত ২০২৪-২০২৫ সেশনে চান্স পেয়েছিল ৫৩জন এবং সারাদেশে ৪র্থ স্থান অধিকার করেছিল এ কলেজেরই ফাইয়াজ নামের এক মেধাবী শিক্ষার্থী। ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেলে চান্স পেয়েছিল ৫৪ জন। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেলে চান্স পেয়েছিল ৭৩ জন। এর আগে বুয়েটে প্রথম স্থানসহ ৩২ জন চান্স পেয়েছিল।
ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন:
১. রাতুল— ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
২. সামিরা আন্নি— ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
৩. তন্ময় শোম— খুলনা মেডিকেল কলেজ
৪. অর্পিতা চক্রবর্তী — ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
৫. ইসরাত জাহান— হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
৬. হাবিব রানা— পাবনা মেডিকেল কলেজ
৭. তাসমিয়া ইফতি— নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ
৮. নন্দিতা সরকার— ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ
৯. শিফাত হাসান— শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ
১০.আহনাফ সাদমান— শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ বগুড়া।
১১. এ আই মাহদি- পাবনা মেডিকেল কলেজ
১২. মো. মাহদি— যশোর মেডিকেল কলেজ
১৩. রিয়াল— সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
আরও পড়ুন: দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে মেডিকেলে চান্স পেলেন ৪৪ শিক্ষার্থী
১৪. নাহিদুল ইসলাম অন্তর— গোপালগঞ্জ মেডিকেল। কলেজ
১৫. সাব্বির হোসেন — সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
১৬. ইয়াসির শাফিন — সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
১৭. মো. রিশাদ ইসলাম — শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ।
১৮. তাসমাউন প্রামানিক — কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ।
১৯. মুসফিকা — ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
২০. মাখনুন সোহরাওয়ার্দী — সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
২১.মুমতাহিনা সারাহ — মুগদা মেডিকেল কলেজ
২২.মুমতাহিনা সামিহা— সিলেট মেডিকেল কলেজ
২৩. বাঁধন মহন্ত — রংপুর মেডিকেল কলেজ
২৪. উৎসব রায়— রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
২৫. সাদিয়া আফরিন মনি— গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
২৬. নাবিলা আকতার নিশি— ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
২৭. মো. সুমন রানা — রংপুর মেডিকেল কলেজ
২৮. আফ্রিদা নাহার — সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
২৯. আফসানা নুর স্নেহা — চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
৩০. সুষ্মিতা ঘোষ — যশোর মেডিকেল কলেজ
৩১. সুরাইয়া দৃষ্টি — শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া
৩২. খাইরুন নাহার — যশোর মেডিকেল কলেজ
৩৩. জারিয়া সুমাইয়া — সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
৩৪. হুমায়রা আনজুম হাদিকা— শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ
৩৫. তাজকিয়া ই জান্নাত— ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
৩৬. রুকাইয়া আল রশ্নি রুকু— দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ
৩৭. রওনাক আফরিন— স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
৩৮. নাবিলা তাবাসসুম— শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ
৩৯. আইমান তামিম— রংপুর মেডিকেল কলেজ
৪০. লিমা আক্তার— দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ
৪১. অর্ণি— রংপুর মেডিকেল কলেজ
৪২. এস এম রিফাত শাহ— সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
৪৩. জারিন মৌরি— শহিদ সোহরাওয়ারদি মেডিকেল কলেজ
৪৪. এ এস এম জুলকার নাইম— নীলফামারী মেডিকেল কলেজ
দিনাজপুর সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল মোমেন বলেন, দিনাজপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখা থেকে প্রতি বছর মেডিকেল, বুয়েটসহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালগুলোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী চান্স পেয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, এবারে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে ৪৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থী চান্স পেয়েছেন। তবে পুরো তথ্য পেতে আমাদের আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: কুবির ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ৭১ হাজার ছাড়াল, সময় শেষ আজ
এছাড়াও ২০২৪ সালের প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকে জানা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে অংশগ্রহণকারী ৪৫৮ জনের মধ্যে ৩৩৬ জন, মানবিক বিভাগে ৮৯ জন, এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কলেজটির মোট ৮২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছেন ৮০৬ জন, অনুপস্থিত ছিলেন ১০ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছেন ২১ জন।
দিনাজপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি এবং সামনে শিক্ষার্থীদের আরো বেশি পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে এবং যুগোপযোগী করে তুলতে অনেক কিছুই প্লান সামনে রেখে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নেতৃত্বে সুচারুরূপে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে অতীতের ন্যায় মেধাবী শিক্ষার্থীবৃন্দ শিক্ষা জীবন শেষ করে বুয়েট, মেডিকেল, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাচ্ছেন এবং দেশের সেবায় নিজেকে নিয়জিত করতে পারছেন।
উচ্চ মাধ্যমিক শাখার তত্ত্বাবধায়ক ড. বাবুল হোসেন জানিয়েছেন, এবারে মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত সবার তথ্য পেলে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানো হবে এবং তাদের দিকনির্দেশনা নিয়ে পরের ব্যাচগুলোর প্রতি যত্ন নেয়া হবে।
কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের এ কলেজের বিসিএস এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শতাধিক শিক্ষক অত্যন্ত যোগ্যতা সম্পন্ন এবং দক্ষ, যাদের পাঠদানের অসম্ভব দক্ষতা রয়েছে। অভিভাবক, শিক্ষার্থী এবং সম্মানিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে সফলতার এ ধারা অব্যহত রাখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আরো বেশি বেশি পড়াশোনায় মনোযোগী করতে যাবতীয় পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।