প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাবি ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত, অন্যগুলো কবে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তারিখ চূড়ান্ত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার সময়সীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য সময়সীমাও প্রকাশ্যে এসেছে। চলতি সপ্তাহে মেডিকেলসহ একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। শুরু হবে রমজান মাসও। সে কারণে নির্বাচন ও রমজানের আগেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে চায় শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সে লক্ষ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগেই সময়সীমা চূড়ান্ত করা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। চলতি অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ হবে। রবিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করেছে। ২০২৬ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হবে ভর্তি পরীক্ষা। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি উপ-কমিটির মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
পরীক্ষা কমিটির এক সদস্য দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এবারের ভর্তি পরীক্ষা ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান) দিয়ে শুরু হবে। ১৬ জানুয়ারি ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান), ১৭ জানুয়ারি ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) এবং ২৪ জানুয়ারি ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এবছরে সিলেকশন থাকবে না। দুই শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম শিফটের পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে ১২টা এবং দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা বিকাল ৩টা থেকে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এবারের ভর্তি পরীক্ষা রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর ও বরিশাল বিভাগে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান পরীক্ষা কমিটির সদস্য।
রুয়েট, কুয়েট ও চুয়েট
গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়—কুয়েট, রুয়েট ও চুয়েট। সে ধারাবাহিকতায় এবারও এ গুচ্ছে থাকছে না রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)। বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
রবিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম। আগামী ৩ জানুয়ারি ২০২৬ প্রাক-নির্বাচনী (বহুনির্বাচনি) এবং ২৩ জানুয়ারি নির্বাচনী (লিখিত) পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে সম্পন্নের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা হয়।
ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হতে পরে এবারের শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী রবিবার (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিনস কমিটির সভায় নেওয়া ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ অনুযায়ী, আগামী নভেম্বরের শুরুতে এবারের শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হবে। আগামী ২৮ নভেম্বর আইবিএ ইউনিট, ২৯ নভেম্বর চারুকলা ইউনিট, ৬ ডিসেম্বর ব্যবসা শিক্ষা ইউনিট, ১৩ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ইউনিট এবং ২০ ডিসেম্বর কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ডিনস কমিটির সভায় ভর্তি পরীক্ষার যে তারিখগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো সুপারিশ আকারে সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। সাধারণত ডিনস কমিটির সভার নির্ধারিত তারিখগুলোই সাধারণ ভর্তি কমিটি চূড়ান্ত তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করে, তেমন কোন পরিবর্তন করে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেছেন, ডিনস কমিটির সভায় যে তারিখগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আগামী ১২ অক্টোবরের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় আলোচনা হবে। সেখানে সকল অংশীজনদের মতামত নিয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
বিইউপি
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শুরুর দিকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)। সে ধারাবাহিকতায় এবারও সবার আগে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা, কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আনে, বিউপিও তার সঙ্গে সমন্বয় করে আগে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি সূত্র বলছে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এ পরিক্ষা হতে পারে।
বিইউপির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসরণ করি। যদি দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আনে, আমরা ও এগিয়ে নেব। কখন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, এ বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
মেডিকেল
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক সভায় ভর্তি পরীক্ষার এ তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।
সভায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমএন্ডডিসি) সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাইফুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্মসচিব মল্লিকা খাতুন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপ ডা. মহিউদ্দিন মাতুব্বর উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'আগামী ১২ ডিসেম্বর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। আবেদনগ্রহণ ও অন্যান্য বিষয় খুব দ্রুত চূড়ান্ত করে জানিয়ে দেওয়া হবে।'
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনের কারণে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসতে পারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষার সময় এগিয়ে নিয়ে আসার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আলী রেজা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী মাসের ৭ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির মিটিং রয়েছে। সেখানে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
জানা যায়, এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা চলে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা গত বছরের চেয়ে অন্তত দুই মাস এগিয়ে আসতে পারে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের কারণে চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার ব্যাপারে ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের পরই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সভায় বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত বছর চবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১ মার্চ থেকে ২২ মার্চ। কিন্তু ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এ সময়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়াটা কঠিন হতে পারে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু ১৬ জানুয়ারি
কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আসলে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি তো আমার একার সিদ্ধান্তে হবে না। আমাদের ভর্তি পরীক্ষার যে কোর কমিটি আছে, তাদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেটা ভালো হবে, আমরা সেটাই করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ুক। আমি চট্টগ্রামের বাইরে আছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েই আমি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ফেব্রুয়ারিতে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এরপর ভর্তি পরীক্ষা নিতে যাই, তাহলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমি উপ-উপাচার্যের (অ্যাকাডেমিক) সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলে রাখছি, যাতে আমরা দ্রুতই এটি নিয়ে বসতে পারি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও উপাচার্য দেশে ফেরার পর এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সানজিদা ফারহানা বলেন, এখনো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি। ফল প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু হবে। উপাচার্য দেশে ফেরার পরে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হবে।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মঞ্জুর মুর্শেদ ভুইয়া জানান, ‘ভর্তি পরীক্ষা ডিসেম্বর নাগাদ হতে পারে। তবে এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ এখনও এবিষয়ে অফিশিয়াল মিটিং হয়নি।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও মিটিং হয়নি। উপাচার্য ফেরার পর মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।
সাধারণ গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা জাতীয় নির্বাচনের আগে হচ্ছে না। আগামী মার্চ-এপ্রিলের দিকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এবার গুচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র বলছে, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা করেছেন উপাচার্যরা। বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন হলে নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেবে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে মেডিকেলসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা হবে। সে বিবেচনায় নির্বাচনের আগে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। মার্চ-এপ্রিলের দিকে এ পরীক্ষা হতে পারে।’ গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ৫ বিশ্ববিদ্যালয় আবার ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জানা গেছে, গত বছর ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল। এর আগের বছর ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হয়। তবে এর মধ্য থেকে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে গিয়ে আলাদা ভর্তি নিয়েছিল। এবার এ প্রক্রিয়ায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ফিরতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গুচ্ছ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। এতে করে কয়েক বছর আগে চালু হওয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতি ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগেও বেরিয়ে যাওয়ার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত গুচ্ছে থেকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সমন্বিত পদ্ধতিতে কিছু অসংগতি ও স্বকীয়তা হারানোর আশঙ্কায় বাকৃবি কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এতে করে বাকৃবির ভবিষ্যৎ ভর্তি কার্যক্রম আলাদাভাবে পরিচালনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আগে টানা পাঁচবার কৃষি গুচ্ছের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বাকৃবি। এবারও তারা সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের কারণে শেষ পর্যন্ত বাকৃবি গুচ্ছে থাকলেও এবার তাদের এই প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে কৃষি গুচ্ছ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আগে টানা পাঁচবার কৃষি গুচ্ছের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বাকৃবি। এবারও তারা সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের কারণে শেষ পর্যন্ত বাকৃবি গুচ্ছে থাকলেও এবার তাদের এই প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে কৃষি গুচ্ছ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কৃষি গুচ্ছভুক্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘বাকৃবি এককভাবে নেতৃত্ব দিতে চায়। তবে আমরা চাই বাই রোটেশন পদ্ধতিতে সব বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিক। বাকৃবি যদি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে আমরাও বেরিয়ে যাব। সবাই হয়তো বেরিয়ে যাবে। তবে আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে।’
জানতে চাইলে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা গতবার কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। বিশেষ অনুরোধে, রাষ্ট্রীয় অবস্থার কারণে বেরিয়ে আসতে পারিনি। আমাদের এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া ছিল। এবারও আমরা আগের অবস্থানেই আছি। আমরা কৃষি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসব, এটাই আমাদের বর্তমান সিদ্ধান্ত।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘এখন মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই খুব তাড়াতাড়ি এসব বিষয়ে মিটিং করবে। তখন আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেব যে, আমরা আলাদা করব। তারপর দেখা যাক সরকার কী করে, অনেক সময় তো সরকার আবার বাধ্যবাধকতাও করে ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে। এ জিনিসগুলো এখনো অনিশ্চিত।’