নির্বাচনের আগে ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের, পরে নেবে যারা
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য সময়সীমাও প্রকাশ্যে এসেছে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। শুরু হবে রমজান মাসও। সে কারণে নির্বাচন ও রমজানের আগেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে চায় শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সে লক্ষ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই সময়সীমা চূড়ান্ত করতে পারেন সংশ্লিষ্টরা।
গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষাও নেয় বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বুয়েট, মেডিকেল, ঢাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফেব্রুয়ারির আগেই পরীক্ষা নিতে চাইলে গুচ্ছগুলো আর সময় পাবে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রমজানের পর তাদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পাশাপাশি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়া কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষাও পরে হতে পারে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল চলতি অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশ হবে। রবিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘উত্তরপত্র দেখার কাজ চলছে। আশা করছি, ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে পারব।’ এ ফলাফল প্রকাশের পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
বিইউপি
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শুরুর দিকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)। সে ধারাবাহিকতায় এবারও সবার আগে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা, কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আনে, বিউপিও তার সঙ্গে সমন্বয় করে আগে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি সূত্র বলছে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এ পরিক্ষা হতে পারে।
বিইউপির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসরণ করি। যদি দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আনে, আমরা ও এগিয়ে নেব। কখন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, এ বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
মেডিকেল
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ডিসেম্বর মাসে হতে পারে। ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করতে আগামী সপ্তাহে সভায় বসতে যাচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি। এ সভায় পরীক্ষার তারিখ ছাড়াও আরও কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন মাতুব্বর দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে আগামী সপ্তাহে আমাদের একটি সভা রয়েছে। সভার তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। এই সভাতেই মূলত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।’
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বঘোষণার কারণে এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার তারিখ এগিয়ে নিয়ে আসার প্রস্তাব এসেছে। এ নিয়ে আলোচনাও এগিয়েছে। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের শিডিউল আছে। এ জন্য ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে এনে ডিসেম্বরে নেওয়ার চিন্তা করছি। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করবে, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পরীক্ষা হয়তো এ বছরেই হয়ে যাবে।’
বুয়েট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এইচএসসির ফল প্রকাশের পরপরই অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সময়সূচি চূড়ান্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করিনি। এইচএসসির ফল প্রকাশের পর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। আমার বা উপাচার্যেরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা গত বছরের তুলনায় অন্তত দুই মাস এগিয়ে আসতে পারে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন এবং রমজানের কারণে চলতি বছরই এ কার্যক্রম শেষ করতে চান বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সেক্ষেত্রে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ভর্তি আবেদন শুরু হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের কয়েকদিনের মধ্যেই ভর্তির কার্যক্রম শুরু করবে কর্তৃপক্ষ। ফল পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই আবেদন শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করলে এ মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হতে পারে।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে। সেখানে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা শেষ করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন সবাই। আগামী ৭ অথবা ১২ অক্টোবর ভর্তি কমিটির সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত দুই শিক্ষক জানিয়েছেন, আগামী ৭ অথবা ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির বৈঠকে পরীক্ষার তারিখের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ। আর এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পর আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এবার ভর্তি পরীক্ষা দুই মাস এগিয়ে এলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আগের স্বাভাবিক সময়সূচিতে ফিরছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল একটি সূত্র মঙ্গলবার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানায়, ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে। সেখানে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা শেষ করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন সবাই। আগামী ৭ অথবা ১২ অক্টোবর ভর্তি কমিটির সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
নির্বাচনের কারণেই ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছর শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত এক শিক্ষক বলেন, আগের বছরের তুলনায় এগিয়ে এলেও এটিই মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার স্বাভাবিক সময়। সাধারণত এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে মাঝে করোনাভাইরাস ও আন্দোলনের কারণে সে সময়সূচি মানা যায়নি।
গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। তার পরিবর্তে নতুন দায়িত্বে আসছেন তথ্য-প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ব্যাংকের উদাসীনতায় ব্যয় হয় না সিএসআরের অর্থ, বঞ্চিত শিক্ষা খাত
মূলত নির্বাচনের কারণেই ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছর শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত এক শিক্ষক বলেন, আগের বছরের তুলনায় এগিয়ে এলেও এটিই মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার স্বাভাবিক সময়। সাধারণত এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে মাঝে করোনাভাইরাস ও আন্দোলনের কারণে সে সময়সূচি মানা যায়নি।
সূত্রটি বলছে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলগুলো নানা ধরনের সভা-সমাবেশ করবে। বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম থাকবে। এসব থেকে মুক্ত থেকে শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাচ্ছন্দে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে জন্য চলতি বছরই পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভানা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে রমজান মাসও শুরু হওয়ায় আগেই ভর্তির কার্যক্রম শেষ করতে চায় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হয় গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে। আবেদন চলে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি শুরু হয়। আইবিএ ইউনিট ৩ জানুয়ারি, চারুকলা ইউনিট (সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্কন) ৪ জানুয়ারি, কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট ২৫ জানুয়ারি, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট ৮ ফেব্রুয়ারি এবং বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির নতুন আহবায়ক তথ্য-প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আগামী মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভায় সবকিছু চূড়ান্ত হবে। এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর শুরু হবে আবেদন প্রক্রিয়া। ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা তিন মাস এগিয়ে আসবে। গত শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি শুরু হয়ে চলে শেষ পর্যন্ত।
গত বছরের ভর্তি পরীক্ষার কমিটিতে থাকা তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ, বি ও সি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১২ এপ্রিল ‘বি’ ইউনিট (ব্যবসায় শিক্ষা), ১৯ এপ্রিল ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) ও ২৬ এপ্রিল ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিদিন এক শিফটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ছাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এ বছর আগে-ভাগেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ও রমজান শুরু হবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির আগেই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ দেব, জানুয়ারির শুরুতেই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। তবে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির মিটিংয়ে সবই চূড়ান্ত হবে।’
ভর্তি পরীক্ষায় সিলেকশন থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সিলেকশন না থাকার সম্ভাবনা বেশি। প্রয়োজনে শিফট বাড়ানো হবে। দুই শিফটের জায়গায় তিন বা চার শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে।’
একই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। খুব দ্রুতই ডাকা হবে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির মিটিং। সেখানে সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: তরুণ শিল্পীদের উদ্যোগে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া লোকগান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা গত বছরের চেয়ে অন্তত দুই মাস এগিয়ে আসতে পারে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের কারণে চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার ব্যাপারে ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের পরই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সভায় বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত বছর চবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১ মার্চ থেকে ২২ মার্চ। কিন্তু ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এ সময়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়াটা কঠিন হতে পারে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।
কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আসলে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি তো আমার একার সিদ্ধান্তে হবে না। আমাদের ভর্তি পরীক্ষার যে কোর কমিটি আছে, তাদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেটা ভালো হবে, আমরা সেটাই করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ুক। আমি চট্টগ্রামের বাইরে আছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েই আমি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ফেব্রুয়ারিতে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এরপর ভর্তি পরীক্ষা নিতে যাই, তাহলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমি উপ-উপাচার্যের (অ্যাকাডেমিক) সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলে রাখছি, যাতে আমরা দ্রুতই এটি নিয়ে বসতে পারি।’
সাধারণ গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা জাতীয় নির্বাচনের আগে হচ্ছে না। আগামী মার্চ-এপ্রিলের দিকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এবার গুচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয়ে কী মন্তব্য পাঠাবে, ছাত্রীদের শিখিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকরা
জানা গেছে, মেডিকেল, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নির্বাচনের আগেই নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বুয়েট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাও এ সময়ের মধ্যে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির আগে পরীক্ষা নেওয়ার মতো আর তেমন সময় থাকবে না। এরইমধ্যে রমজান মাসও আছে। সব বিবেচনায় আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের দিকে এ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
সূত্র বলছে, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা করেছেন উপাচার্যরা। বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন হলে নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে মেডিকেলসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা হবে। সে বিবেচনায় নির্বাচনের আগে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। মার্চ-এপ্রিলের দিকে এ পরীক্ষা হতে পারে।’ গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ৫ বিশ্ববিদ্যালয় আবার ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জানা গেছে, গত বছর ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল। এর আগের বছর ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হয়। তবে এর মধ্য থেকে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে গিয়ে আলাদা ভর্তি নিয়েছিল। এবার এ প্রক্রিয়ায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ফিরতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।