গুচ্ছ ভর্তিতে থাকতে মত নেই গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবি একাডেমিক কাউন্সিলের
দেশের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গঠিত গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) একাডেমিক কাউন্সিল। আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান।
এছাড়াও গত ২ অক্টোবর এবং ১৪ নভেম্বরে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভায় শিক্ষকদের সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গুচ্ছে থেকে বের হতে চাওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, সম্প্রতি বশেমুরবিপ্রবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিতে গুচ্ছের কারিগরি ত্রুটির জন্য আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম চলে আসে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ে জটিল সমস্যা তৈরি করে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় থাকতে অনীহা তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়।
এর আগে গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতি বশেমুরবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দেন এবং ৯৭.৩ শতাংশ শিক্ষক পূর্বের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মতামত দেন। এছাড়া ৩ শতাংশ শিক্ষক ব্যাপক পরিবর্তন সাপেক্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামত দেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত এক সভায় বর্তমান শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উক্ত জরিপের ফলাফল শিক্ষামন্ত্রীর হাতে সভা চলাকালে হস্তান্তর করা হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার দাবির পেছনে ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশ গুচ্ছ ভর্তিতে সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তিকে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া, ৬৩ শতাংশ একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা, ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, ৫৩ শতাংশ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব এবং ৫১ শতাংশ আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এই বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের নিটিংয়ে সকল সদস্যের সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিষয়টি এখন রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপিত হওয়ার পর সেখানে পাশ হলে চূড়ান্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হবে।