পোষ্য কোটা বাতিল চেয়ে যা বললেন সারজিস
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে। এই কোটায় পাস করলেই প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ মিলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনকি ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেও এই কোটায় ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং যোগ্যরা ভর্তির সুযোগ হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পোষ্য কোটা বাতিল চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘পোষ্য কোটা’ নামক তেলা মাথায় তেল দেওয়া কালচার অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
তথ্যমতে, দেশের অর্ধেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে পোষ্য কোটা রয়েছে। স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা এই কোটার সুবিধা পোয়ে থাকেন।
এই কোটার সমালোচনা করে সংশ্লিষ্টরা বলেন, কোটা চালু হয়েছিল সমাজের বিভিন্ন অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। অথচ, পোষ্য কোটাকে এমন জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে যাতে গরীব, মেধাবী, সৎ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও যোগ্যতাকে মূল্যহীন প্রমাণ করা হচ্ছে। যে পরিবারে একজন চাকরি করে, সেই পরিবার এমনিতেই স্বাবলম্বী। তাহলে কীভাবে তাকে অনগ্রসর বলব? সে শুধু কীভাবে পোষ্য কোটার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা রাখে?
আজ শনিবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ৭৭১ পজিশনেও মেধাবীরা ভর্তিবঞ্চিত, পোষ্য কোটায় ৭ হাজারেও চান্স’ শিরোনামে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে রাবিতে এ কোটায় ভর্তি হয়েছেন ৪৪২ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছেন ৯৪ জন। এরমধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৩৬, ‘বি’ ইউনিটে ১৯ এবং ‘সি’ ইউনিটে ৩৯ জন রয়েছেন। এ শিক্ষাবর্ষে মেধাতালিকায় ৭৭১তম হয়েও একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেননি। অথচ পোষ্য কোটায় ৭ হাজার ৭০০ এর ওপরের পজিশনে থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
২০২৩ সালের ৩ জুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত ‘পোষ্য কোটার ধাক্কায় পাস করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবঞ্চিত মেধাবীরা’ শীর্ষক আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধুমাত্র ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন স্বায়ত্তশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২৭ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৫ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে পোষ্য কোটায় ভর্তি করা হয়েছে।