চবিতেও হতাশ বেলায়েত, ভেঙে গেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আলোচনায় আসা ৫৫ বছর বয়সি বেলায়েত শেখ। ২২ আগস্ট চবির ’ডি’ ইউনিটে প্রকাশিত ফলে অকৃতকার্য হয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
বেলায়েত শেখ জানান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন এবারের মতো শেষ তার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ই তার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শেষ ভর্তি পরীক্ষা ছিল। আগামী বছর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে, সেখানে তিনি ভর্তি পরীক্ষা দেবেন।
বেলায়েত আরও জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মতো অর্থ তাঁর কাছে নেই। কেউ আর্থিক সহায়তা করলে তিনি এ বছরই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন।
মরার আগে তাঁর শেষ ইচ্ছা তিনি উচ্চশিক্ষা নেবেন। পরিবারের কেউ উচ্চশিক্ষা নিতে পারেননি, এটাই তাঁর আক্ষেপ।
জানা গেছে, গাজীপুরের মাওনার বাসিন্দা বেলায়েত শেখ ১৯৮৩ সালে প্রথমবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও টাকার অভাবে সে বছর নিবন্ধন করতে পারেননি। ১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু সে বছর সারা দেশে বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: জবিতে যার যত ক্ষমতা তিনি তত দেরী করে আসেন অফিসে।
এর কয়েক মাস পরে তিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ‘দৈনিক করতোয়া’ পত্রিকার গাজীপুরের শ্রীপুর প্রতিনিধি।
কর্মজীবন শুরুর পরে বেলায়েত আর পড়ালেখা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ছোট ভাইকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নও থেকে যায় অধরা। বেলায়েত ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার মেয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও কলেজে যেতে আগ্রহী ছিল না। তার বড় ছেলেও পড়ালেখায় আগ্রহী না। তাই নিজে নেমে পড়লেন ভর্তি যুদ্ধে।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ হন বেলায়ত। এরপর জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন, কিন্তু কোথাও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় নিয়ে সেখানেও অকৃতকার্য হন বেলায়েত।