জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন, তবে স্বপ্ন উচ্চশিক্ষার
তারিফ মাহমুদ চৌধুরী, তৃণা আক্তার সেতু ও আকাশ দাস; জন্ম থেকেই তারা দৃষ্টিহীন। তবে স্বপ্ন অনেক, স্বপ্ন উচ্চশিক্ষার। এজন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্নকে বাস্তবায়নে অংশ নিয়েছেন এবারের গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায়।
শনিবার (১৩ আগস্ট) গুচ্ছভুক্ত মানবিক বিভাগের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দৃষ্টিশক্তিহীন এই তিন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেডিকেল সেন্টারে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা দিয়েছেন তারা।
জবির মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক মিতা শবনমের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা। এ সময় তাদের সহযোগী হিসেবে তিন ব্যক্তিকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, রাজবাড়ীর তারিফ মাহমুদ জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। স্থানীয় বেগগাছি মুজাম্মেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। সুযোগ পেয়েছেন ঢাবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগে। তবে এই বিষয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী নন তিনি।
এ ব্যাপারে তারিফ মাহমুদের মা আফরোজা খান মজলিশ বলেন, ‘তারিফ জন্ম থেকেই চোখে দেখে না। তবে পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী তারিফ। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ অনেক বেশি।’
আকাশ দাস, তিনিও বিশেষ সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী। নরসিংদীর কারারচর মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রাজধানীর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন আকাশ। স্বপ্ন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।
এদের আরও একজন তৃণা আক্তার সেতু। তিনিও জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন। গোপালগঞ্জ থেকে এসেছেন তিনি। স্থানীয় লোহাচূড়া আলিয়া দাখিল মাদরাসা ও মোকছেদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তবে সেবার সুযোগ হয়নি। তাই এবার দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।
তৃণার বড় ভাই সোহেল খান বলেন, ‘জন্ম থেকেই আমার বোন দৃষ্টিহীন। তবুও ওর ইচ্ছাশক্তি ও মেধায় অদম্য।’
এ ব্যাপারে জবির মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ড. মিতা শবনম বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো এই তিনজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা দিয়েছেন।’