গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেন তামান্না
পৃথিবী বৈচিত্র্যময়! তবে স্বপ্ন আকাশ ছুঁয়ে দেখবার। আকাশ ছোঁয়াও কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। প্রয়োজন লক্ষ্য আর ইচ্ছাশক্তি!
তামান্না আক্তার নূরা, সদা হাসোজ্জ্বল মুখ! তবে এ হাসির মাঝেও লুকিয়ে রয়েছে কিছুটা বিষাদের ছাপ। অন্য মানুষগুলোর থেকে তামান্না কিছুটা আলাদা। কারণ তামান্নার দু’টি হাত ও একটি পা নেই। শুধুমাত্র একটি পা-ই তার অবলম্বন! এ পা দিয়ে তিনি তার আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন জয়ের বন্ধুর পথে পাড়ি জমাচ্ছেন।
তামান্না নূরা যশোরের ঝিকরগাছার আলীপুর গ্রামের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির মেয়ে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড় তিনি।
তামান্না পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এরপর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এইচএসসি পরীক্ষার ফলেও জিপিএ-৫ অর্জন করেন তিনি। তামান্না বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
শরীরে মশা-মাছি বসলে তা তাড়ানোর সক্ষমতাও তামান্নার নেই। টেবিলের ওপরে বসে এক পা দিয়ে খাতায় লেখেন তিনি। তার লেখাও দৃষ্টিনন্দন। শুধু বাঁ পা নিয়ে জন্ম নেওয়া তামান্না শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
শনিবার (৩০ জুলাই) বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সারাদেশে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। তাকেসহ আরও দুজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভর্তি পরীক্ষার্থীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এ ব্যাপারে তামান্না আক্তার নূরা জানান, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আশা করি, চান্স পাবো।’
যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষাটি অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। যবিপ্রবি কেন্দ্রে দু’জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এবং একজন গুরুতর অসুস্থ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন, আমরা তাঁদের প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করেছি।’