২১ জুলাই ২০২২, ১১:০১

ভর্তিযুদ্ধ: পরীক্ষার হলে কী করবেন, কী করবেন না?

বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলছে  © ফাইল ছবি

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধ চলছে। কয়েকটিতে পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। গুচ্ছসহ আরও বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভর্তিচ্ছুরা। এই সময়ে প্রস্তুতির পাশাপাশি পরীক্ষার হলে কি করবেন, তা নিয়েও অনেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

এ কারণে পরীক্ষার হলে কোন কোন কাজটি করা উচিত বা উচিত নয়, সে বিষয়ে সবার আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া ভালো। এতে প্রশ্নর উত্তর দেওয়া সহজ হয়। চাপমুক্ত থেকে পরক্ষা দেওয়া গেলে ভালো ফলাফল করা সম্ভব।

১. উত্তরপত্রের ঘর পূরণ করা: উত্তরপত্র হাতে পাওয়ার পর সতর্কতার সঙ্গে বৃত্ত ও অন্য ঘরগুলো যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। কারণ ছোট ভুলের কারণেও অনেক সময় উত্তরপত্র বাতিল বা ফলাফল নাও আসতে পারে। 

২. কোন প্রশ্নের উত্তর আগে দেবেন: পরীক্ষার শুরুতেই কঠিন বিষয়ের উত্তর না দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ কঠিন বিষয় আগে শুরু করে চিন্তা বাড়ে। স্নায়ুচাপ বাড়ার ফলে পরবর্তীতে পরীক্ষার্থী ভীষন চাপে পড়ে যান। এজন্য সব সময় সহজ ও জানাশোনা বিষয়ের উত্তর দিয়ে শুরু করা ভালো। এতে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

৩. দুর্বল বিষয়ের উত্তর কখন দেবেন: প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই কোনো না কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকে। সেটি হতে পারে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান বা অন্য কোনো বিষয়। ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী যে বিষয়ে দুর্বল, সেই বিষয়ে সবার শেষে মনযোগ দেওয়া উচিৎ।

৪. অতি আত্মবিশ্বাসী না হওয়া: পরীক্ষার হলে অতি আত্মবিশ্বাসী হওয়া যাবে না। প্রশ্ন একটু সহজ মনে করে সবগুলো গণহারে উত্তর করা উচিৎ নয়। নেগেটিভ মার্কিং থাকায় আন্দাজের ওপর ভর করে বেশি দাগাতে গিয়ে ক্ষতি হতে পারে। নেগেটিভ মার্কিংয়ের খপ্পরে পড়ে নাম্বার কাটা যাওয়া সম্ভাবনা তৈরি হবে।

৫. সময়ের বিষয়টি মাথায় রাখা: অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটের পরীক্ষায় নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্ন থাকে। এ জন্য সময়ও থাকে নির্দিষ্ট। এ জন্য মোট সময়কে মোট প্রশ্নের সংখ্যা দিয়ে ভাগ দিয়ে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য কত সময় পাওয়া যাবে তা আগে থেকেই পরীক্ষার্থীর নির্ধারণ করে রাখা ভালো। এতে বেশি সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে।

৬. একটি বিষয়ে বেশি সময় না দেওয়া: অনেকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বেশি সময় দিয়ে ফেলেন। এতে অন্য বিষয়গুলোর সময় কমে আসে। তখন অনেক প্রশ্ন উত্তর দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এতে কোনো এক বিষয়ে বেশি সময় না দিয়ে নির্দিষ্ট ও প্রয়োজন অনুযায়ী সময় দেওয়া উচিৎ।

৭. সময়ে এগিয়ে থাকা: কিছু বিষয় থাকে, যেগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়েও দ্রুত দাগানো যায়। বিশেষত সাধারণ জ্ঞান, বাংলার মতো বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। এগুলোতে যে সময় সাশ্রয় হবে তা অংক, ইংরেজি কিংবা অন্য জটিল বিষয়গুলোর রাখতে হবে। এ জন্য পরীক্ষার অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়িতে প্র্যাকটিস করা উচিৎ।

৮. প্রশ্নপত্র ভালোভাবে পড়া: পরীক্ষা শুরুর আগে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশ্নপত্র ভালোভাবে পড়ে নেওয়া জরুরি। কারণ বিভিন্ন ইউনিট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিন্ন ধরনের নির্দেশনা থাকে। আগের বছরের প্রশ্নপত্র দেখে গেলেও এ বিষয়ে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন: পাসের হার সর্বনিম্ন ‘চ’ ইউনিটে, ‘গ’ ইউনিটে সর্বোচ্চ

৯. সঙ্গে পানি রাখা: পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া এবং সঙ্গে পানি রাখা যেতে পারে। মনোযোগ নষ্ট হওয়ার জন্য পানিশূন্যতা অন্যতম কারণ। এ কারণে সম্ভব হলে সঙ্গে পানির বোতল রাখতে হবে।

১০. আগে হল থেকে বের না হওয়া: পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার আগে পরীক্ষার হল থেকে বের না হওয়া উচিৎ। শেষ সময় পর্যন্ত উত্তরপত্রে নজর রাখলে ভুলগুলো নজরে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে।

পরীক্ষার হলে অনেক ছোট ছোট ভুল বা কোনো বিষয় এড়িয়ে যাওয়ায় ফলাফল খারাপ হতে পারে। এ জন্য শুরু থেকে সতর্ক থেকে নিয়মমতো উত্তর দেওয়া গেলে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ সম্ভব।