ইউজিসিতে ভর্তিচ্ছুদের স্মারকলিপি
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর এই স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মো. মিলন হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম ও সুমন মিয়া নামে তিন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এই স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা জানান, আপনি নিশ্চয়ই অবগত যে সম্প্রতি সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রামসহ আরও অসংখ্য জেলার প্রায় সবখানেই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে বাড়ি-ঘর যা ছিল সবকিছু। সাথে ভেসে গেছে বই খাতাও। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সবকিছুই ভেসে গেছে। সেই সাথে ভেসে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন। সবাই দিশেহারা।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার স্বপ্ন দেখে এদেশের প্রতিটা শিক্ষার্থী। বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরাও স্বপ্ন দেখে। এই অবস্থায় আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, যা নিজ চোখে না দেখলে কল্পনা করাও যায় না। আমরা আমাদের জীবন নিয়েই এখন খুব আতঙ্কিত। এই অবস্থায় যদি আমাদের স্বপ্নগুলোও বন্যায় ভেসে যায় তাহলে আমাদের জীবনে আর কি থাকবে? আমরা সবদিকেই চরম সঙ্কটে আছি।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, বন্যার ভয়াবহতা এখনো কাটেনি। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা খুবই সন্নিকটে কিন্তু আমরা এখনো জীবন নিয়েই খুব শঙ্কিত। এ অবস্থায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাটা অন্তত ১৫-২০ দিন পিছিয়ে দেওয়ার বিনীত অনুরোধ করছি যেন আমরা মানসিক ও সার্বিক প্রস্তুতি নিতে পারি। নইলে আমাদের জীবনের ক্রান্তিলগ্নে স্বপ্নগুলোও শেষ হয়ে যাবে। আমাদের তো এমনেই সবকিছু শেষ। দয়া করে, একটু মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের দেখেন। আমরা ভয়াবহ বিপদে আছি যা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এমনেই পিছিয়ে থাকে তার উপর যদি এরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় ও সেই সাথে স্বপ্নগুলোও ভেসে যায় তবে তো শেষ আশাটুকুও থাকে না। ইতোমধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বন্যার কথা চিন্তা করে। আমরাও আপনাদের কাছে মানবিক সিদ্ধান্ত আশা করছি। নইলে আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার মতো আর কিছুই থাকবে না। অতএব, বিনীত নিবেদন এই যে, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ১৫-২০ দিন পিছিয়ে দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নগুলো বাঁচিয়ে রাখুন।