‘সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা হবে’ ভেবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরীক্ষার্থীরা
২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সেপ্টম্বরের পরিবর্তে আগস্টে এগিয়ে নিয়ে আসার বিষয়ে ভাবছে গুচ্ছ কমিটি। সেশনট নিরসনের লক্ষ্যে নতুন এ পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। অবশ্য এটি এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও আগামীকাল সোমবার (৩০ মে) এ বিষয়ে একটি সভা রয়েছে। এতে ভর্তিচ্ছুদের বিষয়টি বিবেচনার দাবি জানানো হয়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা সেপ্টেম্বরে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু গুচ্ছ কমিটির হঠাৎ নতুন এ পরিকল্পনায় তাদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটাবে। তবে ভিন্ন মতও রয়েছে তাদের। একটি অংশের ভর্তিচ্ছুর এ তারিখ নিয়ে সমস্যা নেই। তারা পরীক্ষায় আইসিটি থাকবে নাকি জিকি, সেটির নিশ্চিয়তা চাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বিভাগ পরিবর্তনের ইউনিট রাখার দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে, গত শুক্রবার (২৭ মে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক উপাচার্যদের কমিটির এক সভায় শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমাতে সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ভর্তি পরীক্ষায় এগিয়ে এনে অগাস্টে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়।
পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক সভায় আগামী ৩, ১০ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তিনটি ধাপে এই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: মেডিকেলের মত বিশ্ববিদ্যালয় সিলেক্ট করে দেবে গুচ্ছ কমিটি
এরপর গত শুক্রবারের নতুন পরিকল্পনার খবর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ২২ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তাদের ভিন্ন ভিন্ন মত থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সেপ্টেম্বরের পরীক্ষা সেপ্টেম্বরেই নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত জরিপেও একই দাবি জানানো হয়।
সোহান এসডি নামে এক ভর্তিচ্ছু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষা হবে এটা ভেবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে এভাবে ডেট এগিয়ে নিলে অনেকেই সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবে। আবার আগস্ট মাসে এমনিতেই বেশিরভাগ পরীক্ষা। তার উপরে গুচ্ছও যদি পরীক্ষা নেয় তাহলে তো অনেক চাপ হয়ে যাবে। তাই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সেপ্টেম্বরে হলেই ভালো হবে।’’
এদিকে, আগামীকাল সোমাবরের সভায় ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ, পরীক্ষা ফি, পরীক্ষা কেন্দ্র বাছাই, ভর্তি কার্যক্রমসহ একাধিক বিষয়ে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও চলতি বছরের ভর্তিচ্ছু মো. মাহিন উদ্দিন বলেন, যেহেতু অনেক আগেই বলছে সেপ্টেম্বরে হবে পরীক্ষা; সেই দিক থেকে অনেকে সেভাবেই প্রিপারেশন নিচ্ছিল। ভাবছিল হাতে সময় আছে। কিন্তু হুটহাট করে পরীক্ষা এক মাস এগিয়ে আনলে ওইসব শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়ে যাবে। আগামী সভায় শিক্ষার্থীদের এ দাবি বিবেচনায় রাখতে হবে।
পরীক্ষা এগিয়ে আগস্টে নিলে প্রস্তুতি সমস্যায় পড়তে হবে ভর্তিচ্ছুদের। যশোর এম এম কলেজের শিক্ষার্থী লিখন দে বলেন, আগস্টে নিলে সব থেকে বড় সমস্যা হলো ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছ ও সাধারন গুচ্ছ পরীক্ষার মধ্যে শিক্ষার্থীরা কোনো রকমের গ্যাপ পাবে না। সেই সাথে দেশের বড় দুই পাবলিক পরীক্ষা একসাথে নিলে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিতেই হিমশিম খাবে। অনেক দরিদ্র পরিবার একই মাসে ১৫০০+১৫০০ = ৩০০০ টাকা জোগাড় করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে অনেক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগস্টে পরীক্ষা এগিয়ে আনার বিষয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সেশনজট ‘শূন্যের কোঠায়’ আনতে পরীক্ষা এগিয়ে আনার এ পরিকল্পনা হয়েছে। আমরা যেন ১ জানুয়ারি থেকে সেশন শুরু করতে পারি, সেটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সেজন্যই সময় এগিয়ে নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।