ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে বড় আন্দোলনের আভাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপিতে কাজ না হলে পরবর্তীতে আরও বড় কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না রাখার বড় কারণ ছিল ঢাকায় অতিরিক্ত পরীক্ষার্থীর চাপ না নিতে পারা। তবে করোনার কারণে এ বছর বিভাগীয় শহরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের যে চাপের কথা বলা হয়েছিল সেটি এখন আর নেই।
আরও পড়ুন: ‘শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়া উচিত’
তারা বলছেন, যারা প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো বিষয় পায় না তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো বিষয় পাওয়ার আশায়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মাথায় রেখে যুগোপযোগী বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়তে চাওয়াটা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মতো নম্বর কর্তন করার বিধান রেখে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিতে পারে। এছাড়া যারা প্রথমবারেই চান্স পেয়ে ভর্তি আছে, তারা আর পরীক্ষা দিতে পারবে না এমন শর্ত দিয়েও ঢাবিতে সেকেন্ড টাইম পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবিতে ভর্তির স্বপ্ন দেখা এক ভর্তিচ্ছু বলেন, ঢাবিতে সেকেন্ড টাইমের দাবি কোন ভিক্ষা নয়; এটা আমাদের অধিকার। গণতান্ত্রিক দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা মানি না। আমরা আমাদের অধিকার যেকোনো ভাবেই আদায় করবো। আমাদের পড়ালেখার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।
আরও পড়ুন: গুচ্ছে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ দিতে চান অধিকাংশ উপাচার্য
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অন্য কিছুই চাই নাহ। শিক্ষার একটা সুযোগ চাই। এটা কোনো অপরাধ বা লজ্জার নয়। একটা রাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে সে দেশের জনগনের মৌলিক অধিকার পূরণে বাধ্য। শিক্ষার অধিকারটি মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের এহেন কর্মকান্ডে আমরা বিস্মিত! এমনও নয় যে আমরা সরাসরি সিট দিতে বলছি, শুধু বলেছি আরেকটি সুযোগ দিতে? এটা চাইতে দোষ কিসের? আমরা ঢাবিতে সেকেন্ড টাইম চাই।
ফারিয়া ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানান, ‘‘ঢাবিতে সেকেন্ড টাইম চাই। যদি না হয়, কথা দিলাম প্রয়োজনে আমি জনসম্মুখে বিষ পান করবো। আর আমার একটা জীবনের বিনিময়ে পূরণ হবে আমার মতো ১৩ লাখ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। আমার মৃত্যুর একমাত্র কারণ ঢাবি প্রশাসন।’’
আরও পড়ুন: এইচএসসিতে বায়োলজি পরীক্ষা না দিয়েও মেডিকেলে আবেদনের সুযোগ
এদিকে ঢাবিতে সেকেন্ড টাইম পরীক্ষার সুযোগ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছেন। এই গ্রুপ থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখলে অনেক মেধাবী ছাত্র ঢাবিতে পড়ার সুযোগ পাবেন না- এ ধারণা থেকে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাবি কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে। ঢাবির এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুরা তখন আন্দোলন করেছিলেন। এছাড়া ঢাবি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২৬ জন অভিভাবক আদালতে রিটও করেছিলেন।