জালিয়াতি করে চবিতে চান্স পেয়েছেন মোস্তফার দুই বন্ধুও
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করায় এক ভর্তিচ্ছুকে আটক করা হয়েছে। তার নাম মোস্তফা কামাল উৎস। তার দুই বন্ধুও একইভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটে চান্স পেয়েছেন। সাক্ষাৎকার দিতে এসে আটক হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তফা কামাল বলেন, ‘‘আমার আরও দুই বন্ধু আশিক ও ফরহাদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে। ‘ডি’ ইউনিটে তাদের মেধাক্রম ছিলো ৭৯ ও ২৪৯।’’
তিনি আরও বলেন, তাদের মাধ্যমে জানতে পারি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী ভাই ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামীম ভাইয়ের মাধ্যমে তারা ভর্তি হয়েছে।
পড়ুন: জাবি ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, সাক্ষাৎকার দিতে এসে আটক ১
এর আগে, গত ৩০ ও ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫৪ হাজার ২৫২ জন ভর্তি আবেদনকারীর মধ্যে অংশ নিয়েছেন ৩৫ হাজার ৫০২ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৬৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অনুপস্থিত ছিলেন ১৮ হাজার ৭৫০ জন। যা শতকরা হিসেবে ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এতে পাস করেছেন ১০ হাজার ৩০১ জন শিক্ষার্থী। ফেল করেছেন ৭১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১৮ হাজার ৭৫০ জন অংশগ্রহণ করেননি। যা শতকরা হিসেবে ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
জালিয়াতি করে জাবিতে চান্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে মোস্তফা বলেন, আশিক ও ফরহাদের মাধ্যমে মেহেদী ভাই ও শামীম ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়। তাদের সাথে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে জাবিতে চান্স পাইয়ে দেওয়ার চুক্তি হয়।
‘‘পরে আমার প্রবেশপত্র নিয়ে আমার হয়ে আরেকজন জাবির গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষায় আমার মেধাক্রম আসে ৩০০। এরপর চুক্তি অনুযায়ী পুরো টাকা পরিশোধ করেছি।’’
জালিয়াতি করে জাবি ভর্তি চান্স পাওয়ার পর আজ বুধবার বেলা ১১ টায় সাক্ষাৎকার দিতে এসেছিলেন মোস্তফা কামাল উৎস। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ থেকে আটক করা হয়। আটক মোস্তফার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার উত্তর তারুটিয়া গ্রামে। সে ওই এলাকার মৃত শওকত মিয়ার ছেলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ থেকে মোস্তফা কামালকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।