গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি ভর্তিচ্ছুদের
শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কষ্ট লাঘবে এবং আর্থিক ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রথমবারের মতো ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাএ আয়োজন করে। সিলেকশন প্রক্রিয়া, বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা ইউনিট না রাখা এবং সবশেষ 'এ' ও 'বি' ইউনিটের ফলে ব্যাপক অনিয়নের অভিযোগ ওঠায় এই পদ্ধতির পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ।
তারা বলছেন, প্রথম থেকেই গুচ্ছ কমিটির একের পর এক হটকারী সিদ্ধান্তে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। সেই সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে ফলাফলে অনিয়মের বিষয়টি। ভর্তি পরীক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সরাসরি প্রয়োগ করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ যেভাবে পরীক্ষায় এমসিকিউ দাগিয়েছিল সেভাবে ফল পাননি। কেউ কোনো বিষয়ের ১০টি প্রশ্নের বৃত্ত ভরাট করলেও ফলাফলে ওই বিষয়ে পেয়েছেন ২৫ নম্বর। আবার কেউ ৩৫টি বৃত্ত ভরাট করলেও ফলাফলে দেখাচ্ছে তিনি ১২টি প্রশ্নের উত্তর করেছেন। এই অবস্থায় এই পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি তাদের।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি পাসকৃত শিক্ষার্থী সাবিহা জান্নাত মিশা জানান, আমি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। অনেক আশা ছিল ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তবে গুচ্ছের কারণে আমার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে না। আমি যেভাবে বৃত্ত ভরাট করেছি সে অনুযায়ী ফল পাইনি। যে বিষয়ের ২০টি উত্তর করেছি সেখানে দেখাচ্ছে ৮টির উত্তর করেছি। যা কোনোভাবেই সম্ভব না। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নভঙ্গের এমন পরীক্ষা আমরা আর চাই না।
আরেক শিক্ষার্থী হোসাইন রাশেদ বাদল জানান, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় খারাপ ফলের কারণে আমার এইচএসসির রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। পরীক্ষা হলে আমার ফল অনেক ভালো হত। আমি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিক আবেদন করে সিলেকশনের কারণে বাদ পড়ে যাই। অথচ এর আগে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৮ পেয়েও গুচ্ছভুক্ত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ ছিল। এ ধরনের পরীক্ষায় যেখানে আমাদের সুবিধা হওয়ার কথা, অথচ সেটি না হয়ে আরও ভোগান্তি হচ্ছে। তাই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
যদিও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন কমিটির দাবি, সামান্য কিছু ভুল ছাড়া তারা সুষ্ঠুভাবেই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করেছেন। এত বড় একটি কর্মযজ্ঞে দুই/একটি ভুল হবেই। তবে তা বড় কোনো ভুল নয়। আগামী বছর আরও সতর্কতার সাথে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
আয়োজক কমিটির দাবি, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট না করায় ফলাফল আসানরূপ হয়নি। এটির জন্য শিক্ষার্থীই দায়ী। ভর্তিচ্ছুরা সঠিকভাবে ওএমআর শিট পূরণ করলে এই সমস্যা হত না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির দুই যুগ্ম আহবায়ক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা মিটিংয়ে আছেন বলে জানায়।