গুচ্ছ পরীক্ষা: সংগীত-চারুকলার মতো বিভাগগুলোতে যেভাবে ভর্তি
প্রথমবারের মতো ২০২০-২১ বর্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ভর্তিযুদ্ধ। কিন্তু এই ভর্তি পরীক্ষায় সংগীত, চারুকলা, নাট্যকলা, ফিল্ম এন্ড টেলিভিশনের মতো ‘বিশেষ’ বিভাগগুলোর জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন তা বুঝতে পারছেন না অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।
অন্যান্যবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বিশেষ বিভাগগুলোর ভর্তি পরীক্ষা কোনো ইউনিটের অধীনে এমসিকিউ পদ্ধতিতে নেওয়া হলেও পরে বিভাগগুলো আলাদাভাবে মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থী নির্বাচন করত। জবিসহ আরও ১৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে এবার।
নাঈম হাসান নামে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, গান, আঁকা- এসবের প্রতি আমার আকর্ষণ অনেক দিনের। পড়তেও চাই এসব নিয়েই। কিন্তু এই বিভাগগুলোতে কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারলাম না। প্রস্তুতিরও একটা ব্যপার আছে।
গুচ্ছভুক্ত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান- তিনটি গুচ্ছে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। সেই ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রকাশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব শর্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন, নাট্যকলা, চারুকলা ও সংগীত বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই আলাদাভাবে লিখিত, ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা নিত। বাড়তি যোগ্যতা চাওয়া হত বলে আলাদাভাবে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হত। এসব বিভাগে এবার কিভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম বলেন, আমরা আমাদের পুরোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে চাই। গুচ্ছ পদ্ধতিতে যারা আমাদের বিভাগ পছন্দ করবে, আমরা তাদের মধ্য থেকে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা নিয়ে চূড়ান্ত করতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষার পর বিভাগগুলোতে ভর্তি হতে আগ্রহীদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। গুচ্ছ পদ্ধতির মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরাই তাতে সুযোগ পাবে।
“মেধা তালিকার শিক্ষার্থীদের আগের শিক্ষাবর্ষের মতোই পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত করব। এ বিভাগগুলোতে মানবিকের শিক্ষার্থীদের সুযোগ বেশি থাকবে। তবে বাকিদেরও সুযোগ দেওয়া হবে।”
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও এরকম বিশেষ বিভাগ রয়েছে। প্রাথমিক মেধা তালিকা ‘বি’ ইউনিট থেকে এসব বিভাগের জন্য চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এ এইচ এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরে বিশেষ বিভাগগুলোতে ভর্তি করার জন্য তাদের আলাদা একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার পদ্ধতি এখনো ঠিক করিনি। আগে বড় পরীক্ষাটা (গুচ্ছ) হয়ে যাক।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব বিভাগে ভর্তির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসাইন বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষার পরে আমরা কিছু শর্ত দেব। এটা নিয়ে আমাদের কথা হচ্ছে। গুচ্ছ পরীক্ষার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে গুচ্ছের মেধা তালিকা থেকেই বিশেষ বিভাগগুলোর জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগ, ২৪ অক্টোবর মানবিক বিভাগ এবং ১ নভেম্বর বাণিজ্য বিভাগের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।