বিষন্নতায় ৫০ ভাগ ভর্তিচ্ছু, আত্মহত্যার চিন্তা ১৮ শতাংশের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:০৯ AM , আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:০৯ AM
প্রথম সারির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সফলতা একজন শিক্ষার্থীকে শুধু তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ লাভ করে না। বরং ওই শিক্ষার্থীর পরিবারকে সমাজে ভিন্নমাত্রার মর্যাদায় উন্নীত করে। আবার ভর্তিযুদ্ধে হেরে গেলে তার জন্য বয়ে আনে অন্য রকম গ্লানি। ভর্তি পরীক্ষায় সফলতাকেন্দ্রিক এই সামাজিক বেড়াজাল প্রভাব ফেলেছে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থেও। এ ধরনের মানসিক চাপে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরের ৮ এপ্রিল মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল পার্সপেকটিভস ইন সাইকিয়াট্রিক কেয়ার বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করে।
`Suicidal behaviors and university entrance test‐related factors: A Bangladeshi exploratory study' শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধটিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ বিষণ্নতা, ২৯ শতাংশ উদ্বেগ এবং ৪৪ শতাংশ অবসাদ ও ক্লান্তিতে ভুগছেন। এর মধ্যে ১৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী গত এক বছরে আত্মহত্যার চিন্তা করছেন। আর ৮ শতাংশ আত্মহত্যার পরিকল্পনা এঁকেছেন এবং ২ শতাংশ আত্মহত্যার প্রচেষ্টা করেছেন।’
২০১৯ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ওপর প্রত্যক্ষ জরিপের ভিত্তিতে এ গবেষণা করা হয়।
গবেষণায় জানা যায়, যারা দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন, তাদের মানসিক সমস্যাগুলো প্রকট। আত্মহত্যার প্রবণতায় অন্যদের তুলনায় দেড়গুণ ঝুঁকিতে আছেন তারা। তাছাড়া বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাণিজ্য বিভাগের তুলনায় মানসিকভাবে কম স্থিতিশীল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত মোহাম্মদ মামুন, ইসমাইল হোসেন ও ফিরোজ আল মামুন এবং পাবনা মেডিকেল কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত জান্নাতুল মাওয়া মিষ্টি এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। ‘চিন্তা রিসার্চ বাংলাদেশ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান দ্বারা গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণা দলের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ মামুন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা দ্বিতীয় প্রধানতম মৃত্যুর কারণ। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ আত্মহত্যা অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের মধ্যে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়া, অকৃতকার্য হওয়া, সম্পর্কজনিত সমস্যা আত্মহত্যার প্রধান কারণ। শিক্ষার্থীদের মাঝে আবেগতাড়িত আত্মহত্যার হার বেশি। আত্মহত্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদি যন্ত্রণা, অর্থকষ্ট, মানসিক সমস্যার ফলে সাধারণত বেশি ঘটে।