প্রশ্নফাঁস রোধ ও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কঠোর অধিদফতর
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সতর্কতা ও কভিড-১৯ থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ২ এপ্রিল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর। এক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুযায়ী সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান করে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। খোলা রাখতে হবে কান। আসন বিন্যাসে থাকবে নির্দিষ্ট দূরত্ব। অন্যদিকে প্রশ্নফাঁসসহ সব ধরনের অসদুপায় রোধে শিক্ষার্থী তো বটেই, পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত পরিদর্শকরাও স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। যদিও জরুরি ক্ষেত্রে অ্যানালগ টেলিফোন ব্যবহারের সুযোগ থাকছে।
তথ্যমতে, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি অস্বীকার করে। যদিও সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তিতে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি উঠে এসেছে। মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে মামলাও করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। জানা যায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সন্ধান পায় সিআইডি।
যদিও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর বলছে, এ বছর কঠোর সতর্কতায় মেডিকেল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশ্নফাঁস বা অসদুপায় অবলম্বনের কোনো সুযোগ নেই। এর আগে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব সাক্ষরিত এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ নেই। পরীক্ষার্থীদেকে গুজবে কান না দিয়ে এবং প্রতারণায় পা না দিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে এ বছরের এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কার্যক্রম চলছে। সুষ্ঠু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহল সজাগ রয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তৎপর রয়েছে। প্রতারকচক্রের প্রলোভনে সাড়া না দেওয়ার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয়েছে বার্তায়।
এছাড়া প্রতারক চক্রের কোন অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম ও নিকটস্থ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে রাজধানীসহ দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৪টি ভেন্যুতে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। এবার রেকর্ডসংখ্যক এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন। গত বছর আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭২ হাজার।
সামগ্রিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব বলেন, পরীক্ষার হলে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আতঙ্কিত না হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, এ বছর করোনার সংক্রমণ থাকায় পরীক্ষার হলে মাস্ক পরিধান করেই পরীক্ষা দিতে হবে। কেন্দ্রের প্রবেশপথে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার হলে কর্তব্যরত পরীক্ষক কোনো পরীক্ষার্থী ভুয়া সন্দেহ হলে মাস্ক খুলে যাচাই করা হবে। তাছাড়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভেন্যুর সংখ্যাও দ্বিগুণ করা হয়েছে।