জিপিএ নিয়ে সুখবর নেই, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান মেডিকেল ভর্তিচ্ছুরা
- এম টি রহমান
- প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০৪ AM , আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৪৬ AM
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এইচএসসির ফলাফল না দেওয়ায় এখনো শুরু হয়নি মেডিকেল, প্রকৌশল ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। তবে আগামী মার্চ-এপ্রিল নাগাদ অধিকাংশ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। এছাড়া করোনার কারণে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অটোপাস দেওয়ায় প্রকৌশল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর শর্ত কিছুটা শিথিল করে লিখিত কিংবা এমসিকিউতে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এ ধরনের তেমন ছাড় দেওয়া হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে এইচএসসিতে এবার অটোপাস দেওয়ায় অনেক ভর্তিচ্ছু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন। ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, এসএসসিতে যাদের ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছিল তারা এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু অটোপাস দেওয়ায় এবার এইচএসসিতেও তাদের আগের পরীক্ষার মতোই ফলাফল হবে। এতে অনেকেই মেডিকেলে ভর্তির শর্ত পূরণ করতে পারবেন না। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করায় ভর্তির শর্তের বিষয়ে কেউই নিশ্চিত নন।
তারা আরো বলছেন, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর আলোকে দেওয়া নম্বরের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। এতে আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এখন তারাও চান, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর ভিত্তিতে দেওয়া নম্বর ও শর্ত কিছুটা শিথিল করা হোক। অন্যথায় বিপুল সংখ্যক মেডিকেল ভর্তিচ্ছুর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না বলে তারা জানিয়েছেন।
এদিকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে আগামী ২ এপ্রিল মেডিকেল এবং ৩০ এপ্রিল ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর শর্ত শিথিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে। সে কারণে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা অনেক সময়সাপেক্ষও। বুয়েট, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তা করার সুযোগ নেই। এতে আইনি জটিলতা তৈরির শঙ্কা রয়েছে বলেও ওই সূত্র জানায়।
তবে মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন বলেন, ‘এবার যেহেতু অটোপাসের কারণে এমন বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সে কারণে আমরা এ দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় পরীক্ষা হলে আমরা নিজেরাই হয়তোবা ভালো ফলাফল করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতাম। যেহেতু সে সুযোগ নেই, সেক্ষেত্রে জিপিএর শর্ত শিথিল করে মেধার ভিত্তিতে পরীক্ষায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পারলে মেডিকেল কেন পারবে না?’ এসময় মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের এ দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ভর্তিচ্ছুরা জানিয়েছেন, সাধারণত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের শর্ত থাকে এসএসসি ও এইচএসসির মোট জিপিএ ৯। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় এর ভিত্তিতে বরাদ্দ থাকে ২০০ নম্বর। এরমধ্যে এসএসসি ও সমানের ওপর ৭৫ এবং এইচএসসি ও সমমানের ওপর ১২৫ নম্বর। ভর্তিচ্ছুদের দাবি, এবার যেহেতু অটোপাস, সেহেতু এসএসসিতে কিছুটা খারাপ করা শিক্ষার্থীরা এইচএসসিতেও খারাপ ফলাফল করবেন। সেক্ষেত্রে অনেকে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো নম্বর তুলতে পারবেন না, অনেকের আবেদনের যোগ্যতাও থাকবে না। এ অবস্থায় জিপিএর এই শর্ত শিথিল করে ভর্তি পরীক্ষায় মেধার মূল্যায়ন করে মেডিকেলে ভর্তি করানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
মেডিকেল ভর্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. এ কে এম আহসান হাবীব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছেন, ‘এইচএসসি ও সমমানের রেজাল্ট প্রকাশিত না হওয়ায় আমাদের প্রস্তাবনায় অনুমোদন দেয়া হয়নি। তবে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে যদি এইচএসসির ফল প্রকাশিত হয় তাহলে আগামী ২ এপ্রিল মেডিকেল ও ৩০ এপ্রিল ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’