কোচিংয়ের বাইরেও আট ঘন্টা পড়তে হবে
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীর তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সংখ্যা কম থাকায় ভর্তি পরীক্ষা পরিণত হয়েছে ভর্তি যুদ্ধে। এই যুদ্ধে জয়ী হয়ে অনেকে যেমন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছে যায়, তেমনি যুদ্ধে হেরে গিয়ে স্বপ্নও বিসর্জন দিতে হয় অনেককে।
কেউ কেউ প্রথমবারেই সফলতা পায় আবার কারো সফলতার জন্য করতে হয় দ্বিতীয় চেষ্টা। এসময় তাদের মোকাবেলা করতে হয় হতাশাসহ অনেক পারিপার্শ্বিক সমস্যার। এমনই একজন শিক্ষার্থী মোঃ জোবায়দুল ইসলাম লিয়ন।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে আসন সংখ্যায় দেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন এই শিক্ষার্থী। বর্তমানে অধ্যয়ন করছেন গণিত বিভাগে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছুদের জন্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র নিকট নিজের ভর্তি যুদ্ধ জয়ের গল্প তুলে ধরেছেন লিয়ন, সেই সঙ্গে দিয়েছেন কিছু পরামর্শও।
স্কুল শিক্ষক বাবা এবং গৃহিণী মায়ের সন্তান লিয়ন ছোটোবেলা থেকেই পড়ালেখায় ছিলেন বেশ মনোযোগী। ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল ও অর্জন করছিলেন। এসএসসি এবং এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জনের পর স্বপ্ন দেখছিলেন দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করার। কিন্তু মানুষমাত্রই স্বপ্নপূরণে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। লিয়নের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
ঢাকায় কোচিং এ ভর্তির পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগে প্রায় দুই মাস। ততদিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। লিয়নের পক্ষে এই স্বল্প সময়ে পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ সম্ভব হয়নি। ফলে হেরে যান প্রথমবারের ভর্তি যুদ্ধে। ফিরে যান নিজ শহর কুড়িগ্রামে।
তবে প্রথমবার হেরে গেলেও লিয়ন তার স্বপ্নকে হারিয়ে যেতে দেননি। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন। আর শিগগিরই পরিশ্রমের ফলও পান। বশেমুরবিপ্রবির ‘বি’ ইউনিটে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য লিয়নের পরামর্শ, কোচিংয়ের বাইরেও প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘন্টা পড়তে হবে। প্রতিটি বিষয়ের বেসিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে এবং বিস্তারিতভাবে জানতে হবে। লিয়ন মনে করেন ভর্তি পরীক্ষায় একটি নাম্বারও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই কোনো বিষয়কেই অবহেলা করা যাবেনা।
এর পাশাপাশি নেগেটিভ মার্কিং সম্পর্কেও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন এই শিক্ষার্থী। সবশেষে তিনি জোর দিয়েছেন আত্মবিশ্বাস ও পরিবারের সমর্থনের প্রতি। তার মতে ভর্তি পরীক্ষায় সফলতার জন্য ভালো প্রস্তুতির পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা প্রথম বার ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তাদের জন্য আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হতাশাই সফলতার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাড়ায়। বর্তমানে গণিত নিয়ে স্নাতক করলেও লিয়নের স্বপ্ন পড়াশোনা শেষ করে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করার। নিজের মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করে দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করতে চান নিজেকে।