মেডিকেলে ইমপ্রুভমেন্ট পদ্ধতি পুনর্বহাল চান ভর্তিচ্ছুরা, যা বলছে অধিদপ্তর
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় খারাপ করা বিষয়ে ইম্প্রুভ (মানোন্নয়ন) দিয়ে আগামী বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ দাবি করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের একাংশ। তাদের দাবি, অসুস্থতাসহ নানা দুর্যোগের কারণে কাঙিক্ষত প্রস্তুতির অভাবে পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল করা সম্ভব হয়নি। ফলে জিপিএ গ্রেড কম হওয়ায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি তাদের। এমতাবস্থায় বাতিল করা ইমপ্রুভমেন্ট পদ্ধতির পুনর্বহাল চান শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইমপ্রুভমেন্ট দেওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এ বিষয়ে ইতিবাচক। তবে এটি নীতিমালার বিষয়। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালা তৈরি করে না। এটি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) দেখে। তারা সিদ্ধান্ত নিলে ইমপ্রুভমেন্টের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল হতে পারে।
জানা গেছে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত সেকেন্ড টাইমারদের মতো ইমপ্রুভমেন্ট দেওয়া শিক্ষার্থীও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে তাদের সে সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইম্প্রুভমেন্টে শিক্ষার্থীদের সুযোগের বিষয়টি বিবেচনার কথা ছিল। তবে সেটিও আলোর মুখ দেখেনি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিবছরই অসংখ্য শিক্ষার্থী নানা কারণে এইচএসসি পরীক্ষা বা কিছু কিছু বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। এমনকি ভালো এবং নিয়মিত ছাত্র হওয়ার পরও ফলাফল খারাপ হয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থী তখন দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে অনেকের স্বপ্ন থাকে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন নিয়মের কারণে ইমপ্রুভমেন্ট দেওয়া শিক্ষার্থীরা আর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না।
বগুড়ার ছাত্রী ইশরাত জাহান দিশা বলেন, ‘ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি এবং বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই এ স্বপ্ন আরো দৃঢ় হয়। প্রতিটি বোর্ড পরীক্ষায় আমি ভালো ফলাফল করেছি। এইচএসসির সময় চরম অসুস্থতা নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। এ কারণে পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় ফলাফল কাঙিক্ষত হয়নি। ইমপ্রুভমেন্ট পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাং অংশগ্রহণের সুযোগ চাই।’
যে কোনো শর্তে হলেও ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ চান জানিয়ে সিরাজগঞ্জের শিক্ষার্থী ওমর খাইয়ুম বলেন, ছোটবেলা থেকে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। কিছু সমস্যার কারণে জীববিজ্ঞানে যথাযথ নাম্বার পাইনি। ইমপ্রুভ দিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে চাচ্ছি। তবে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি। বিষয়টি সমাধানে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান এ শিক্ষার্থী।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিএমডিসি সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান এবং প্রতিষ্ঠার রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকতকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।