একক ভর্তি পরীক্ষার সভায় যে আলোচনা হলো
একক ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে গঠিত সাব কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় কম্পিউটার বেজড টেস্ট নাকি পেপার বেজড টেস্ট হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সাব কমিটি। এছাড়া তৈরিকৃত মূল্যায়ন খসড়ায় বেশ কিছু বিষয় সংযোজন করতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৩ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং একক ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়ন সংক্রান্ত সাব কমিটির একাধিক সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত মূল কমিটির দায়িত্বে থাকা ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একক ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। ঈদের পর আগামী ২৩ জুন পুনরায় সভা ডাকা হয়েছে। ওই সভায় মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া চূড়ান্ত করা হতে পারে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, তৈরিকৃত খসড়া একক ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত মূল কমিটির দায়িত্বে থাকা ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খানের কাছে উপস্থাপন করা হয়। তিনি খসড়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিষয়টি নিয়ে আরও কাজ করার আহবান জানান। বেশ কিছু বিষয় সংযোজন করার পরামর্শ দেন।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে গতকাল রবিবারের সভায় উপস্থিত এক অধ্যাপক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একক ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়ন নিয়ে তৈরি খসড়ায় পরীক্ষার প্রশ্ন কেমন হবে সে বিষয়ে কিছু বিষয় যুক্ত করতে বলা হয়েছে। কম্পিউটার বেজড নাকি পেপার বেজড টেস্ট হবে সেটিও চূড়ান্ত করা যায়নি। এজন্য ঈদের পর আবার সভা ডাকা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তিনটি গুচ্ছ আলাদাভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে। এছাড়া ঢাবি-রাবি-জাবি-চবির পরীক্ষা পদ্ধতিও ভিন্ন। ফলে আমাদের এমন একটি পদ্ধতি বের করতে হবে যেখানে সবকিছুই থাকবে। শুধু এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না। কেননা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাবিতে লিখিত পরীক্ষা রয়েছে। কাজেই লিখিত অংশও রাখার বিষয়ে মতামত এসেছে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। ঈদের পর এ খসড়া চূড়ান্ত করা হতে পারে।
এদিকে পরীক্ষা পদ্ধতির খসড়া চূড়ান্ত করতে সাব কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন প্রতিনিধিকে যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ঢাবির ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) এবং অন্যজন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর)। এছাড়া রাবির যে প্রতিনিধিকে যুক্ত করা হয়েছে, তিনি বর্তমানে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত রয়েছেন।
সূত্র বলছে, একক ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে তৈরিকৃত খসড়ায় দুই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে। এর মধ্যে একটি হলো- কম্পিউটার বেজড টেস্ট। আর অন্যটি হলো- প্রচলিত পদ্ধতিতে অর্থাৎ খাতার মাধ্যমে মূল্যায়ন। প্রাথমিকভাবে খাতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হতে পারে। পরবর্তীতে কম্পিউটার বেজড মূল্যায়নের দিকে যাবে কমিটি। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পরীক্ষা পদ্ধতির খসড়া তৈরির সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে প্রচলিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে তিনটি ট্র্যাকে পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখা। তিনটি ট্র্যাকের ক্ষেত্রেই কমন কিছু বিষয় থাকবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- ভাষা। এ বিষয়ে দক্ষতা নির্ণয় করতে সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর করতে হতে পারে।
বাংলা ও ইংরেজির উত্তর বাধ্যতামূলক হলেও বিভাগভিত্তিক অন্যান্য বিষয়েও পরীক্ষায় উত্তর করতে হবে। বিভাগভিত্তিক প্রশ্নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পঠিত বিষয় প্রাধান্য থাকবে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পদার্থ, রসায়ন ও গণিত বিষয়ে প্রশ্ন বেশি থাকবে। এর পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজিও থাকবে।
গত ৩১ অক্টোবর ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে স্নাতক পর্যায়ে ‘কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ-২০২৩’এর খসড়া চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় ইউজিসি। তবে সেটি সে সময় চূড়ান্ত করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমনকি পাঠানো হয়নি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়েও। পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ নভেম্বর একক ভর্তি পরীক্ষা সম্ভব নয় জানিয়ে ইউজিসিতে চিঠি পাঠানো হয়।