মাঝপথে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, ৭০০ রাবি ভর্তিচ্ছু পরীক্ষা দিলেন যেভাবে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলছে। গতকাল মঙ্গলবার ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন চতুর্থ শিফটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন প্রায় ৭০০ ভর্তিচ্ছু। তবে মাঝপথে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারণে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় পড়েন ট্রেনে ওঠা ভর্তিচ্ছুরা। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের কারণে পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণের সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বিষয়টির বিস্তারিত তুলে ধরেন তার নিজের ফেসবুক পেজে। নিচে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য অসীম কুমার তালুকদারের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘‘আজ (০৫/০৩/২০২৪) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তি যুদ্ধ বলা যেতে পারে। প্রায় ৭০০ ছাত্র ছাত্রী আজকে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকেল সাড়ে তিনটার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন । রেল ব্রোকেনের জন্য ধুমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়।
সকাল ১১ টায় হিসেব করে দেখা গেল ট্রেনটি বিকেল ৩টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রেনটি অন্য ট্রেনকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম। ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেইল করে, চাকা ঘুরছে না । কি করা যায়, কি করা যায় পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধুমকেতু আবার চালু করলাম। হিসেবে করে দেখলাম ট্রেনটি বিকেল ৪টায় রাজশাহী পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।
মাননীয় ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পেছানোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে প্রায় ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন। ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে। দুশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্ত না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাশ করলাম। ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোড়ে জোড়ে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানত ও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম, তখন বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিট। দৌড় দৌড় হলে ঢুকতে হবে ৪ টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম ছেলে মেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষনিক ভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম(পাকশী)। এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।’’