২৭ মে ২০২৩, ১৮:৪০

দুই হাত নেই, চবিতে চান্স পাওয়া জব্বার পরীক্ষা দিলেন গুচ্ছতে

জব্বার আলী

উচ্চ মাধ্যমিক শেষে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। আসন সংখ্যার স্বল্পতার  কারণে এই স্বপ্ন পূরণে তাদের সামিল হতে হয় অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ভর্তিযুদ্ধে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্যই এই সময়টা চ্যালেঞ্জিং হলেও সেসব শিক্ষার্থীর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাদের জন্য অপেক্ষাকৃত অধিক চ্যালেঞ্জিং।

তবে এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানেননি পাবনার জব্বার আলী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি অংশগ্রহণ করেছেন জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়। সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।

পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার বাসিন্দা জব্বার আলী। বাবা-মা ও ৪ ভাই-বোন নিয়ে তার পরিবার। জন্মের সময় থেকেই যুদ্ধ করে যাচ্ছেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সাথে। তবে হাল ছাড়েন নি তিনি। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় আল হেরা কলেজ থেকে অংশ নিয়ে পেয়েছেন জিপিএ ৫। এসএসসিতেও পেয়েছেন ৪.৬৭। 

আরো পড়ুন: গুচ্ছের ‘সি’ ইউনিটের ফল হতে পারে সোমবার

দুই হাতেরই প্রায় সম্পূর্ণ অংশ না থাকলেও জব্বার আলীর রয়েছে তুমুল আত্মবিশ্বাস। আর তাইতো হাতের অল্প অংশ ও পা দিয়ে লিখেই গুচ্ছ পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। এর আগে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটে চান্স পেয়েছেন তিনি।

আজকের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আজকের পরীক্ষা ভাল হয়েছে। আমার লিখতে কোন অসুবিধা হয় নি। আমি হাত ও পা উভয় দিয়ে ই লিখতে পারি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সি ইউনিটে চান্স পেয়েছি। ইনশাল্লাহ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায়ও ভাল করবো।

নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে জব্বার বলেন, বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন ভাল করে পড়াশোনা করে ভাল একটা চাকরি পেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কিন্তু আমি এই উদ্দেশ্যে পড়ছি না। আমি চাই নিজেকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলতে। আর সেইসাথে আমার মতো যাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা আছে তাদেরও  আমি পড়াশোনা করে দেখিয়ে দিতে চাই। তাদের জন্য অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যেতে চাই। 

এসময় জব্বার আরও জানান, তার বাসা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দূরত্ব হলেও পরিবারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবেন। নিজেকে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলবে।