ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা

ছাত্রলীগের ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ ভর্তিচ্ছুর স্বপ্ন বাঁচালো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে ভুল কেন্দ্রে চলে যান অনেকে। সেখান থেকে সঠিক কেন্দ্র চিনে পৌঁছাতে লাগে বেশ খানিকটা সময়। অনেক সময় পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পৌঁছাতে পারেন না। ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদের এই সংকট কাটাতে ও দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগের ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ এবারও প্রশংসা কুড়িয়েছে।

গতকাল শনিবার (৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর পাশাপাশি অরাজনৈতিক জেলা ও উপজেলা ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো ঢাবি ক্যাম্পাসই ভরে যায় চেয়ার-টেবিল-ব্যানারে। বরাবরের মতো এবারো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় এদিন দারুন কিছু উপহার দিতে পেরেছে ছাত্রলীগের জয়বাংলা বাইক সার্ভিস।

এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচির একটি ছিলো জয় বাংলা বাইক সার্ভিস। এই জয় বাংলা বাইক সার্ভিসেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলো এক নারী শিক্ষার্থী। আর এই মহৎ কাজটিই করে দেখিয়েছেন আজিজুল হক নাঈম নামে ছাত্রলীগের এক নেতা। 

এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষার্থীরা সবাই যখন পরীক্ষার হলে, তখন ওই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তার কেন্দ্র রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে না গিয়ে ভুলক্রমে ঢাবি ক্যাম্পাসে চলে আসে। বিষয়টি বুঝতে পারে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে দায়িত্বরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তাই দেরি না করে ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’র মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীকে খুব দ্রুতই কেন্দ্রে পৌঁছে দেন আইন অনুষদ ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল হক নাঈম।

আজিজুল হক নাঈম ঢাবির আইন বিভাগের ২০২০-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। রাজনীতিতে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। 

জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই তরুণীর পরীক্ষার সিট পড়েছিলো সরকারি তিতুমীর কলেজে। পরীক্ষার সময় যখন মাত্র ৩০ মিনিট বাকি, তখন ওই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চলে এসেছিলো ভুল করে। ফলে এই সময়ে তার কেন্দ্রে পৌঁছে পরীক্ষা দেয়া ছিলো প্রায় অসম্ভব। ঠিক এই সময়ে এগিয়ে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী। তিনি জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের সেবা নিয়ে হাজির হন সেই নারী শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে। ফলে সেই নারী শিক্ষার্থী পরীক্ষার ১৫ মিনিট আগেই হলে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থী এভাবেই জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের সুবিধা পেয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়ে থাকে৷ যারা পথ ভুল করে কিংবা কেন্দ্র ভুলে অন্য কেন্দ্রে চলে আসে তখনই ত্রান কর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এই নাঈমের মতই অন্যান্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও।

শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করেন নাঈম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাই আমার এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্দেশ্য। আমার এই কাজে আমার অনুপ্রেরণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক, রিয়েল লাইফ হিরো, তানভীর হাসান সৈকত ভাই। এটা তো শুধু একজন শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা, আমি চাই দেশের মানুষের সেবা করার জন্য যেনো আমার মাধ্যমে তারা ছাত্রলীগের ভালো দিকগুলো চিনতে ও বুঝতে পারে। একজন শিক্ষিত এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি এবং ভবিষ্যতেও করে যাব।

মেয়ের সাহায্যের ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত ওই তরুণীর মা বলেন, আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়ে হয়তো পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আর সুযোগই পাবে না। কিন্তু নাঈমের এই সাহায্যের কারণে আমার মেয়ের দীর্ঘ ৪ মাসের পরিশ্রম বৃথা যায়নি। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেনো নাঈমকে তার মনের আশাগুলো পূর্ণ করে দেন এবং মানুষের সেবায় যেনো আরও কাজ করে পারে।

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ছাত্রলীগের মূল ধর্মই হলো সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যায় সাহায্য নিয়ে সামনে এগিয়ে আসা। শুধু গতকালই নয় বরং সকল পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পানি বিতরণ, অভিভাবকদের বসার স্থান, মেডিকেল বুথ, জয় বাংলা বাইক সার্ভিস সহ সার্বিক সাহায্য করছি। নাঈম যে-ই কাজটি করেছে সেটাও ছাত্রলীগের একটি পদক্ষেপের অংশ এবং অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ।

(ভর্তিচ্ছু ছাত্রীর পরিচয় গোপন রাখতে তার ও তার মায়ের নাম প্রকাশ করা হলো না।)


সর্বশেষ সংবাদ