১৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩৩

গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ফাটল, বেরিয়ে গেছে তিন বিশ্ববিদ্যালয়

গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ফাটল, বেরিয়ে গেছে তিন বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমকে সহজ করতে নেওয়া ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ফাটল ধরেছে। ইতিমধ্যে এ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়। এদের মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। একটি ভর্তি কমিটি গঠন করেছে। আর অপরটি বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।

সূত্র বলছে, ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে আরও অন্তত একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও একাধিক সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। শিগগিরই তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে আসবেন বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যেও রয়েছে গুচ্ছ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির এখনো গুচ্ছ প্রক্রিয়ার পক্ষে অবস্থান রয়েছে। যেখানে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ প্রক্রিয়া ভেঙে যাওয়ার পথে, সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির পক্ষ থেকে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: জবিতে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব

২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ তথ্য বলছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুত করে রেখেছে। আজ অথবা কালের মধ্যে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতির ভর্তি কমিটি গঠন করে রেখেছে। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতির পরীক্ষা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।

মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখতে চাইলেও এটি শিক্ষকদের প্ররোচনায় ব্যহত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর শিক্ষকরা বলছেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে গুচ্ছ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছি, বিগত দুই বছরেও সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা যায়নি।

আরও পড়ুন: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুত, কালকের মধ্যে প্রকাশ

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন গুচ্ছে থাকতে চান না
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা বলছেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার যে আইনগত ভিত্তি প্রয়োজন সেটি নেই, এমনকি তার কোনো পরিকল্পনাও নেই। এছাড়া এ পরীক্ষা যে নেয়া হচ্ছে সেটিরও আইনত বৈধতা নেই। কেননা জাতীয় সংসদে স্ব-স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিজস্ব আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন রয়েছে।

‘‘সেই বিধিমালা অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে।কিন্তু সেই বিধি লঙ্ঘন করে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এ বিশ্ববিদ্যালয়কে তুচ্ছ করেছে।’’

আরও পড়ুন: গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে গেল বশেমুরবিপ্রবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর ফলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতার বিষয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।

গুচ্ছের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন: গুচ্ছে থাকবে জবি-ইবি-বশেমুরবিপ্রবি—আশা ইউজিসির

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।