১০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৪

পরীক্ষার হলে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুরা, বাইরে অভিভাবকদের ভিড়

ঢাবির কলা ভবনের সামনে মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ভিড়  © টিডিসি ফটো

দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর এমবিবিএস ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আজ শুক্রবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে আসনগ্রহণ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। আর অভিভাবকরা অপেক্ষা করছেন বাইরে। সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা শুরু হবে।

রাজধানীর ৫টিসহ দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। সকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের তল্লাশি করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও আনসার সদস্য। আর অভিভাবকরা বাইরে অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭ জন। সরকারি মেডিকেলে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি। সে হিসেবে আসনপ্রতি লড়বে ৩২ জনের বেশি শিক্ষার্থী। আর সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৮টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন রয়েছে ১১ হাজার ১২২টি। সেই হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ১২ জন পরীক্ষার্থী।

দেশে মোট সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩৭টি। সরকারি মেডিকেলে এমবিবিএসে চার হাজার ৩৫০টি আসন রয়েছে। মেধা কোটায় তিন হাজার ৩৮৪ জন, জেলা কোটায় ৮৪৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৮৭ জন ও উপজাতি কোটায় ৩৩ জন ভর্তি হতে পারবেন। এছাড়া ৭১টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছয় হাজার ৭৭২টি আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে ৩৩ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী মেধা ও পছন্দের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবেন।

এদিকে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করা অন্যতম।

পরীক্ষার্থীকে হল পরিদর্শকের নির্দেশ ও সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং হল পরিদর্শকের অনুমতি ব্যতীত পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কক্ষ ত্যাগ করতে দেয়া হবে না। পরীক্ষার্থীকে অসুদপায় অবলম্বন অথবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে অথবা অন্যের সাহায্য নিতে অথবা অন্যকে সাহায্য করতে দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তার উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন, কোন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস, ক্যালকুলেটর, হাতঘড়ি বা পকেটঘড়ি নিয়ে প্রবেশ করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এরপরও পরীক্ষার হলে কারো কাছে উল্লিখিত নিষিদ্ধ কোন কিছু পাওয়া গেলে অথবা কাউকে এ ধরনের কোন ডিভাইস ব্যবহার করতে দেখা গেলে তার উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

পরীক্ষার হলে সকল পরীক্ষার্থী কোভিড ১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। কোন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দুই কান ঢেকে রাখতে পারবেন না। হল পরিদর্শকগণ উত্তরপত্রে স্বাক্ষর প্রদানের সময়ে শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীর মুখমণ্ডল খোলার নির্দেশনা দিতে পারবেন।

প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সংক্রান্ত নিয়মাবলী: পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তরপত্রের (OMR Sheet) উপর মুদ্রিত ১০ অঙ্কের সেট কোডটি প্রশ্নপত্রে মুদ্রিত সেট কোডের সাথে না মিললে কিংবা প্রশ্নপত্রে ক্রমানুসারে এক থেকে একশতটি প্রশ্ন না থাকলে উত্তরপ্রশ্নপত্রটি পরিবর্তন করে নিতে হবে। উত্তরপত্রের সকল স্থানেই কালো কালির বল পেন ব্যবহার করতে হবে।

রোল নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর নির্দিষ্ট স্থানে ইংরেজিতে লিখে তারপর সংশ্লিষ্ট বৃত্তগুলো তদানুযায়ী যথাযথভাবে ভরাট করতে হবে। কোন প্রকার ঘষামাজা বা কাটাকাটি করলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। বৃত্তগুলো নিচের প্রদর্শিত পদ্ধতিতে এমনভাবে ভরাট করতে হবে যেন ভিতরের লেখাটি দেখা না যায়।

উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশপত্র অনুযায়ী স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে এবং স্পষ্টভাবে নাম লিখতে হবে, অন্যথায় উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। উত্তর প্রদান করার আগে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্রের সাথে সংযুক্ত উত্তরপত্রটি (OMR Sheet ) নিজ দায়িত্বে সাবধানতার সাথে আলাদা করে নিতে হবে।

প্রশ্নপত্রের সাথে দেয়া উত্তরপত্রে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য চারটি সম্ভাব্য উত্তরের বৃত্ত রয়েছে। তার মধ্য হতে সঠিক উত্তরের বৃত্তটি পরিচ্ছন্নভাবে উপরে প্রদর্শিত নিয়ম মেনে সম্পূর্ণ ভরাট করতে হবে। উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট বৃত্তসমূহ ভরাট করা এবং নির্দেশিত স্থানে যথাযথ তথ্য প্রদান করতে হবে। এতদ্ব্যতিত অন্য কোন স্থানে কিছু লিখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং লিখলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

খসড়ার জন্য প্রশ্নপত্র ব্যবহার করা যাবে। কোন পৃথক কাগজ ব্যবহার করা যাবে না। প্রশ্নপত্রের কোন অংশ ছেড়া যাবে না কিংবা কারও সাথে বদল করা যাবে না। উত্তরপত্রে হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর করার সময়ে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আলাদা করা অবস্থায় রাখতে হবে। উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর গ্রহণ এবং সম্পূর্ণ নাম লিখা নিশ্চিত করতে হবে। কর্তব্যরত হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর ও নামবিহীন উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

পরীক্ষা শেষে হল পরিদর্শকগণ প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আলাদা অবস্থায় পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে গ্রহণ করবেন এবং আলাদাভাবে নির্দিষ্ট খামে ভরবেন। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর প্রদান করা হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।