আগে ভর্তি নিয়েও প্রায় অর্ধেক আসন খালি থাকছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে

  © ফাইল ছবি

এবারও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সারাদেশের কলেজগুলোতে স্নাতক ভর্তিতে কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতেই প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ফলে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষেও কোনো ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তথ্যমতে, ২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে প্রায় দুই বছর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। সেজন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করে, এজন্য সে সময় থেকে তারা সবার আগে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করছে।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরু হতো। এতে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেত না, তারা সহজেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজে ভর্তি হতে পারত। 

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে ভর্তি নেওয়ার ফলে দেখা যাচ্ছে, অনেক শিক্ষার্থী প্রথমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি হয়ে থাকছে, পরে আবার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলে চলে যাচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে।

অন্যদিকে, আগে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েও প্রায় অর্ধেক আসন খালি থাকছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

ইউজিসির ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২১ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (পাস)/স্নাতক (সম্মান)/স্নাতক কারিগরি/সমমান পর্যায়ে আসন সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৯ হাজার ৭৯১টি। আর ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী ছিল ৬ লাখ ১৩ হাজার ১৩৩ জন, আসন শূন্য ছিল ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬২টি। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক আসন খালি ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।

অন্যদিকে, করোনা আগে যখন প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরু করা হতো তখন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির তথ্যচিত্র ছিল ভিন্ন। ইউজিসির ২০১৯ সালের ৪৬তম বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ওই বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পাস/স্নাতক সম্মান/স্নাতক কারিগরি/সমমান পর্যায়ে আসন সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭২ হাজার ৮১৫টি। আর ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী ছিল ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭২ জন, আসন শূন্য ছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৭৪৩টি। অর্থাৎ ২০১৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে চার ভাগের তিন ভাগ আসন পূরণ হয়েছিল।

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে পড়তে না হয় সেজন্য এবারও ঢাকাসহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শিগগির ভর্তি পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বসে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ার দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে বলে তিনি জানান।

সবার আগে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ফলে আর্থিকভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বেশি শিক্ষার্থী অন্য (পাবলিক) বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায় না। এ সংখ্যা খুবই কম। তাই এটি বড় কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।


সর্বশেষ সংবাদ