মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ১৭ মার্চ!
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ মার্চ নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন মিললে ১৭ মার্চ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ভর্তি পরীক্ষা তারিখ, আবেদন গ্রহণের তারিখ, পরীক্ষার ভেন্যু, আবেদন ফি, আবেদনের যোগ্যতাসহ যাবতীয় বিষয়ের খসড়া করা হয়। এই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ওই সূত্র আরও জানায়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৩ সালের ২২ অথবা ২৩ মার্চ থেকে রোজা শুরু হবে। রোজার মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে না। সেজন্য রোজা শুরুর আগেই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী বছরের মার্চের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এটি নির্ভর করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের ওপর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে তবেই তারিখ চূড়ান্ত হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রোজার কারণে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে দুটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি হলো ১০ মার্চ ভর্তি পরীক্ষা, আর দ্বিতীয়টি হলো ১৭ মার্চ। ১৭ মার্চ পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা একমত পোষণ করেছেন। কোনো সমস্যা না হলে ১৭ মার্চই এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন না পেলে কোনো কিছুই চূড়ান্ত না। তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।
তিনি আরও বলেন, মার্চের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শুক্রবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় শুক্রবার পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২২ অথবা ২৩ মার্চ থেকে রোজা শুরু হবে। রোজা শুরুর পূর্বেই আমরা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা শেষ করতে চাই।
পরীক্ষার সিলেবাস
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের আলোকে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস থেকে প্রশ্ন বেশি থাকবে। এভাবেই খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।
আবেদন যোগ্যতা
খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী ২০২১ বা ২০২২ সালে এইচএসসি বা সমমানের উভয় পরীক্ষায় পদার্থ, রসায়ন ও জীববিদ্যাসহ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ভর্তির আবেদন করার যোগ্য হবেন। গত শিক্ষাবর্ষের ন্যায় এবারও এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান দুটি পরীক্ষায় মােট জিপিএ কমপক্ষে ৯.০০ হতে হবে । সকল উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার অ-উপজাতীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮.০০ হতে হবে। তবে এককভাবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০-এর কম হলে আবেদনের যোগ্য হবেন না।
পরীক্ষার মানবন্টন
মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একঘণ্টা সময় থাকবে। এই এক ঘণ্টায় ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ১০০ নম্বরের মধ্যে জীববিজ্ঞানে ৩০, রসায়নে ২৫, পদার্থে ২০, ইংরেজিতে ১৫ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
নম্বর কর্তন
মেডিকেলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একজন ভর্তিচ্ছুর পাঁচ (০৫) নম্বর কাটা হবে। তবে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী যদি কোনো সরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজ/ইউনিট-এ ভর্তি হয়ে থাকে তাহলে তার ক্ষেত্রে ৭.৫ নম্বর কাটা হবে। এছাড়া আগের মতোই লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
পাশ নম্বর
লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম নম্বর প্রাপ্তরা অকৃতকার্য বলে গণ্য হবে। শুধুমাত্র কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।