ঢাবি-চবিতে না থাকলেও সেকেন্ড টাইম থাকছে অন্তত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে
ভর্তি যুদ্ধে স্বস্তির আরেক নাম সেকেন্ড টাইম সুযোগ। প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ না পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীদের জন্য সেকেন্ড টাইম বা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ যেন আশীর্বাদ স্বরুপ। তবে বর্তমানে সব বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ থাকে না। আগামী ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাবি অন্তর্ভুক্ত সাত কলেজে সেকেন্ড টাইমের সুযোগ না থাকলেও অন্তত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকছে সেকেন্ড টাইমের সুযোগ।
এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেয়া তথ্য মতে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রোফেশনালস (বিইউপি), ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলোজি, কৃষি গুচ্ছ সমন্বিত ৭ বিশ্ববিদ্যালয় (শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকছে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ।
আরো পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিভাগভিত্তিক যোগ্যতা প্রকাশ, আসন ১১০৯টি
দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম বলেন, আগামী বছর ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এখনো কোনো বৈঠক হয়নি। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ না থাকলে কমপক্ষে একবছর আগে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া উচিত। সে হিসেবে এবারের জন্য হলেও দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ রাখা উচিত।
এছাড়াও আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজসহ সকল মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজেও সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। আগামী (২০২২-২৩) শিক্ষাবর্ষের জন্য এটিই সিদ্ধান্ত। তবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি নিজেদের বর্তমান সিদ্ধান্ত থেকে বের হয়ে যায় অথবা অন্য কেউ যদি যুক্ত হয় তবে সেটি তারা পরে জানাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর একটি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর যেসব ভর্তিচ্ছুরা তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পছন্দের বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পান না তারাই মূলত সেকেন্ড টাইমের প্রস্তুতি নেন। এসব ভর্তিচ্ছুদের বড় একটি অংশের আবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কিন্তু এগুলোতে নেই সেকেন্ড টাইমের সুযোগ। পরে দেখা যায়, তারা এসব শিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেকেন্ড টাইমের জন্য আন্দোলনের করেন।
তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ২০২১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইমের সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। মূলত ঢাবিতে সেকেন্ড টাইমের সুযোগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পথে হাঁটছে।
এদিকে, ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধের ঘোষণার পর পরই প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেবছরের সেকেন্ড টাইম প্রত্যাশী ভর্তিচ্ছুরা। তবে এতে সাড়া দেইনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে ভর্তিচ্ছুরা আন্দোলন করে আসছিলেন। সর্বশেষ চলতি শিক্ষাবর্ষেও ঢাবিতে চান্স না পাওয়া ভর্তিচ্ছুদের একটি অংশ গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম না রাখার বিষয়ে ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেছেন, ২০১৪ সালে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ ছিল। এই কারণগুলো সেসময় আমরা সকলেই যৌক্তিক মনে করেছিলাম, এখনো করি। এছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের পক্ষে না।