প্রস্তুতি থাকলেও পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই
করোনার কারণে আগের দুই বছর হয়নি পিইসি, জেএসসি, ইবতেদায়ি সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষা। তবে চলতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় পরীক্ষা হবে কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোয়াশা। তবে দুই মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও এর প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে।
শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলছেন, দুই বছর পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা হয়নি। নতুন কারিকুলাম চালু করতে তিন-চার বছর বাকি আছে। এ সময়ে পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে তারা। আর পরীক্ষা নেওয়া হলেও তা আগেই জানানো উচিত ছিল। কারণ নভেম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হয়, এখন চলছে এপ্রিল মাস। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর দাবি তাদের।
যদিও পিইসি, জেএসসি, ইবতেদায়ি সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম শেষ হবে চলতি মাসেই। তবে এসব পরীক্ষার বিষয়ে কোনো আইন নেই। ২০০৯ সাল থেকে মন্ত্রিসভার নির্বাহী সিদ্ধান্তে পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষার ব্যাপারে আমরা এখনই ভাবছি না। করোনায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। এ জন্য নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ক্লাস। ক্ষতি পোষাতে ২০ রমজান পর্যন্ত বিদ্যালয় খোলা থাকছে। পরে পরীক্ষা নিয়ে ভাবব। ’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে জেএসসির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করে রাখা হচ্ছে।’
জানা গেছে, গত বছর নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছর পাইলটিং এবং আগামী বছর বাস্তবায়ন হবে এটি। নতুন এই শিক্ষাক্রমে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা গ্রহণের বিধান রাখা হয়নি। নতুন কারিকুলামে ২০২৪ সাল থেকে জেএসসি ও জেডিসি এবং ২০২৫ সাল থেকে থাকছে না পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা।
আরো পড়ুন: রমজানে সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন, প্রজ্ঞাপন জারি
পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে পুরো ক্লাস হচ্ছে। এ জন্য ছেলেকে দুজন শিক্ষকের কাছে কোচিং করাচ্ছি। রাতে বাসায় আরেক শিক্ষক এসে পড়ান। এতে দিন-রাত পার হয়ে যায় তার। পিইসি পরীক্ষা না থাকলে ছেলেকে এত কষ্ট করতে হতো না বলেও মনে করেন তিনি।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা শিশুদের জন্য বড় বোঝা। এ জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়, মানসিক চাপ নিতে হয়। দুই বছর পরীক্ষা হয়নি, এতে বড় কোনো ক্ষতিও হয়নি। এ বছর থেকেই পরীক্ষাগুলো বন্ধ করা হোক।