১১ জুলাই ২০২১, ১৫:৪৮

পরীক্ষা না নেয়াসহ এসএসসি-এইচএসসি মূল্যায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিন প্রস্তাব

পরীক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

পরীক্ষার মাধ্যমেই এ বছর এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের শিক্ষার্থীদের ফল দিতে চায় সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত যদি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব না হয় তখন বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করার চিন্তা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। কীভাবে বিকল্প মূল্যায়ন করা হবে সেটি ঠিক করতে একটি কমিটিও করা হয়েছে। পরীক্ষা না নেয়াসহ এই কমিটির তিনটি প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিকল্প মূল্যায়নে গঠিত কমিটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় চলতি বছর এখনো এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজন করা যায়নি। তবে তারা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখতে চান। করোনা সংক্রমণ কমে আসলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া যায় এমন প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে।

আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে পরীক্ষা ছাড়াই বিকল্প মূল্যায়নের প্লানও তৈরি করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা না নিতে পারলেও শিক্ষার্থীদের আর অটোপাস দেয়া হবে। মূল্যায়নের মাধ্যমেই তাদের ফল দেয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরই বিষয়টি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে চায় সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, তিনটি প্রস্তাবের মধ্যে একটি হচ্ছে রচনামূলক কিংবা সৃজনশীল অংশ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র এমসিকিউ পদ্ধতির পরীক্ষা নেয়া। আরেকটি হলো দুইটি বিষয় একীভূত করে একটি বিষয় করা। এক্ষেত্রে ২০০ নম্বরের বিষয়গুলো ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিকল্প মূল্যায়নে গঠিত কমিটির এক সদস্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমরা তিনটি প্রস্তাব তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। তারা সেটি যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যে প্রস্তাব অনুমোদন দেবেন সেটি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেবেন।

তিনি বলেন, তিনটি প্রস্তাব এমনভাবে করা হয়েছে যে, যে পদ্ধতিই চূড়ান্ত করা হোক না কেন— শিক্ষার্থীদের এবার আর অটোপাসের সুযোগ থাকছে না। যেকোনো ভাবেই হোক তাকে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়েই ফল দেয়া হবে। পরীক্ষা নিতে না পারলেও মূল্যায়নের মাধ্যমেই রেজাল্ট দেয়া হবে।

শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখার কথা অনেকেই বলছেন— কতদিন সময় অতিবাহিত হলে আপনারা পরীক্ষা নেবেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে মূল্যায়ন কমিটির ওই সদস্য আরও জানান, শেষ পর্যন্ত বলতে আমরা অক্টোবর-নভেম্বর মাস বুঝিয়েছি। এর পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারলে পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিকল্প মূল্যায়নে গঠিত কমিটির প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলে চলতি সপ্তাহেই সংবাদ সম্মেলন করে এ  বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক রোববার (১১ জুলাই) দুপুরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার বিকল্প পদ্ধতির মূল্যায়ন বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই সংবাদ সম্মেলন করবেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নেয়ার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষা আয়োজন করা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।এই অবস্থায় এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিকল্প মূল্যায়নের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

কীভাবে বিকল্প মূল্যায়ন করা যায় সেটি ঠিক করতে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,  ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের (বেডু) সদস্যরা রয়েছেন।