এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কী
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী চলতি মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত ছুটি থাকবে। এরপর কি হবে সেটা এখনও ঘোষণা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই অবস্থায় সবচেয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কবে হবে বা আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তাদের।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বোর্ড থেকে বারবার বলা হচ্ছে, এবার কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হবে না। পরীক্ষা নিয়েই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল দেওয়া হবে। তবে পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর।
করোনা মহামারীর আগে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করে আসছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে যখন করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিল, তার আগেই এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষারা আটকে যান। করোনার প্রকোপ না কমায় পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
২০২১ সালে এসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারায় যথাসময়ে নেওয়া হয়নি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এই মহামারীতে শিক্ষাপঞ্জি ভেস্তে যাওয়ায় সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসানোর কথা বলছিল সরকার।
গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খোলা হোক না কেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস করিয়েই এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নিবো। এক্ষেত্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪ দিন ক্লাস করানো হবে।
কিন্তু সেই ক্লাস শুরুর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির দিকে।
এই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়াশোনায় মনোযোগ ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তাদের প্রশ্ন রয়েছে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি নিয়েও।
এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ভাবতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। কেউ কেউ দ্রুত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর পক্ষে, আবার অনেকের মধ্যে সে বিষয়ে দ্বিধা আছে।
মহামারীর কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফা খোলার পরিকল্পনা নিয়েও মহামারী পরিস্থিতির কারণে বার বার হোঁচট খেতে হয়েছে।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে চলমান লকডাউনের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়েছে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মহামারী পরিস্থিতির উপরই নির্ভর করছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর আরও আড়াই মাসের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, আমরা ক্লাস নিয়ে পরীক্ষা নেব। অটো পাস দেব না। প্রতি বিষয়ে এসএসসিতে ৬০টি ক্লাস ও এইচএসসিতে ৮০টি ক্লাস নিয়ে আমরা পরীক্ষাটা নেব।
এই ক্লাস শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বসতে হবে বলে পরিকল্পনা করেছেন তারা।
সে হিসেবে ২৯ মের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও অগাস্টের শেষভাগের আগে পরীক্ষা আয়োজনের সুযোগ থাকছে না।