এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা কিছু অর্থ ফেরত পাবেন: শিক্ষামন্ত্রী
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা ফরম পূরণের জন্য যে অর্থ দিয়েছিলেন, পরীক্ষা না হওয়ায় এর কিছু অংশ ফেরত পাবেন। এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় ফরমপূরণ বাবদ আদায়কৃত অর্থের অব্যয়িত অংশ পরীক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ আজ শনিবার (৩০ জানুয়ারি) পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা শেষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় চলতি বছর সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘যেহেতু এবার সবাই পাস করেছেন, সেহেতু সকলের হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্ভব হবে না। আমাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে তাও তো নয়। আমাদের আরও নানা রকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার অনেক জায়গা আছে। সেখানে জায়গা খালি থাকে, কিন্তু আমরা শিক্ষার্থী পাই না। এবার আশা করি সেদিকে অনেকেই যেতে উদ্বুদ্ধ হবেন। এটা তাদের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গত বছর যে সুযোগ ছিল, এবারও স্বাভাবিকভাবে যতটুকু বেড়েছে ততটুকুই। তাতে যারা জিপিএ-৫ পেয়েছে তারাসহ সবাইকেই এই পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে, বিভিন্নভাবে এ পরীক্ষা হবে। কাজেই সেখানে তারা তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে, স্বাক্ষর দিয়েই ভর্তির সুযোগ পাবে।’
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল ঘোষণা করেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ছাড়াও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সামনে থাকা বাটন চেপে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফলাফল গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরীক্ষা ছাড়া সেই ফলাফলই আজ ঘোষণা করা হলো। এবার তাই কেউ ফেল করেনি। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল গড় করে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
সদ্য ঘোষিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। তবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে ৩৯৬ জন জিপেএ-৫ পাননি। ৯টি সাধারণসহ সব বোর্ডের সমন্বয়ে ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জেএসসি-এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় করে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, জেএসসি ও এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ থেকেও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পায়নি ৩৯৬ জন। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ৮৬৫ জন এবং ২০১৮ সালে ছিল ৫২ হাজার ৬৩৪ জন। জেএসসি ও সমমানের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমানের ৭৫ শতাংশ গড় করে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭ হাজার ৪৩ জন। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল আট হাজার ৫৭০ জন। এছাড়া ২০১৮ সালে চার হাজার ১৫৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। আগের বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। সে হিসেবে এবার অটোপাসে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনগুণেরও বেশি।