০৭ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৫২

এইচএসসি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী—অভিমত শিক্ষাবিদদের

এইচএসসি পরীক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক বেঞ্চে একজন করে বসিয়ে হলেও পরীক্ষা নেয়ার কথা ইতোপূর্বে জানানো হযেছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে। বিগত কয়েক মাসে এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা নিয়েও কম ‘পানি ঘোলা’ হয়নি। বিভিন্ন সময় নানান উড়ো খবরে শিক্ষার্থীরাও ছিলো দোলাচালে। কেউ নিচ্ছিলেন এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি কেউবা আবার ছিলেন এইচএসসি পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে।

তবে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সবশেষ আজ শিক্ষামন্ত্রী নিজেই জানালেন এবছর হচ্ছেনা এইচএসসি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের জেএসসি এবং এসএসসির ফলের সমন্বয়েই তৈরি হবে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল।

তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি নয় দেশের শিক্ষাবিদরা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আত্মঘাতী বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান ও জানিয়েছেন তাঁরা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপচারিতায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অদ্যাপক যতীন সরকার বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর এই পরীক্ষাটা প্রতিটা শিক্ষার্থীর পরবর্তী জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলো তা আমার বোধগম্য নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই পরীক্ষা নেওয়াটা নেহায়েত প্রয়োজন। এর ফলাফল সুদূর প্রসারী। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাই আমি মনে করি এই সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের বের হয়ে আসা উচিত।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এমন সিদ্ধান্ত কতটুকু প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘এবার যেহেতু মূল্যায়নটা চেঞ্জ হয়ে গেল, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যখন তাদের ভর্তির নিয়ম-কানুনগুলো ঠিক করবে তখন নিশ্চয়ই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা নির্ধারণ করবে। আমার মনে হয় সেদিক থেকে অসুবিধা হওয়ার কথা না। করণ ছেলেমেয়েরা হয়তো কেউ জেএসসিতে খারাপ করেছে আবার এএসসিতে ভালো করেছে। কেউ এসএসসিতে খারাপ করেছে জেএসসিতে ভালো করেছিল। এইচএসসি দিয়ে কেউ হয়তো আগের রেজাল্টের চেয়ে ভালো করতো, আবার কেউ হয়তো খারাপও করতো। এই ভালো-খারাপের বিষয়টা সবসময়ই অনিশ্চয়তার মধ্যেই থাকবে।’

ফলাফলের হেরফেরে উচ্চশিক্ষায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হতে পারে বলে মনে করছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি বলেন, ‘যেহেতু জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে রেজাল্ট তৈরি করা হবে সেক্ষেত্রে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা এই ব্যাপারটিকে ঠিকমত গোছাতে না পারেন তবে অনেকেরই স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। এক্ষেত্রে পরবর্তী নীতিমালা কি হয় সেটাই দেখার বিষয়।’