১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৪৫

এইচএসসি ফল খারাপ? কী ধরনের সন্দেহ হলে খাতা চ্যালেঞ্জ করা উচিত

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এক শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর)। এবারও ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে খাতা পুনঃনিরীক্ষা বা খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ। তবে এবারের আবেদন পদ্ধতিতে এসেছে নতুনত্ব—পুরো প্রক্রিয়াটি হবে অনলাইনে। 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন শুরু হবে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এবং চলবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো অফিসে সরাসরি আবেদন গ্রহণ করা হবে না বলে জানানো হয়েছে।

পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে কী ধরনের সন্দেহ থাকলে খাতা চ্যালেঞ্জ করা উচিত:

অপ্রত্যাশিতভাবে কম নম্বর:
পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো ছিল, প্রশ্নও নিজের মতো করে ঠিকঠাক উত্তর দেওয়া হয়েছে — অথচ ফলাফলে নম্বর আশানুরূপ নয়। এমন ক্ষেত্রে মূল্যায়নে বা নম্বর গণনায় ত্রুটি থেকে থাকতে পারে। তাই ফলাফলে অপ্রত্যাশিত পার্থক্য থাকলে খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন যৌক্তিক হতে পারে।

নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্যতিক্রম ফল:
সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও কোনো একটি বা দুটি নির্দিষ্ট বিষয়ে হঠাৎ কম পাওয়া গেলে সেটি সাধারণত ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়। হয়তো পরীক্ষক প্রশ্নপত্রের কোনো অংশ মিস করেছেন, কিংবা যোগফলে ভুল হয়েছে। এমন অসঙ্গতি থাকলে পুনঃনিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

খাতায় নম্বর যোগে ভুল সন্দেহ হলে:
পরীক্ষক প্রশ্নভিত্তিক নম্বর লিখে শেষে মোট নম্বর যোগ করেন। কখনও দেখা যায়, যোগ করার সময় ১-২ মার্ক বাদ পড়ে গেছে বা যোগে হয়েছে। খাতা পুনঃনিরীক্ষায় এসব যোগফল পুনরায় পরীক্ষা করা হয় এবং ত্রুটি ধরা পড়লে সংশোধন করা হয়। 

নম্বর স্থানান্তরে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে:
খাতায় লেখা নম্বর বোর্ডের ডাটাবেইসে ম্যানুয়ালি বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। এই পর্যায়ে ভুল সংখ্যা বা ভুল বিষয় ইনপুট হলে ফলাফল ভিন্ন হয়ে যেতে পারে। পুনঃনিরীক্ষায় বোর্ড এই তথ্যগুলোর সঠিকতা পুনরায় যাচাই করে।

পাসের খুব কাছাকাছি অবস্থান:
অনেক সময় শিক্ষার্থী মাত্র ১ বা ২ নম্বরের জন্য ফেল করে। এই ধরনের ক্ষেত্রে খাতার নম্বর যোগে ভুল হলে, পুনঃনিরীক্ষণে ফল পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকে। তাই এমন অবস্থায় আবেদন করা যুক্তিযুক্ত।

গ্রেড পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকলে:
যদি কোনো শিক্ষার্থী ৫৯, ৬৯ বা ৭৯ নম্বরের মতো সীমার কাছাকাছি অবস্থানে থাকে, তাহলে মাত্র ১-২ নম্বর বাড়লেই তার গ্রেড এক ধাপ উন্নতি পেতে পারে। এই কারণে অনেকেই গ্রেড উন্নতির সম্ভাবনায় খাতা চ্যালেঞ্জ করেন।

প্রশ্নপত্রের কোনো অংশ বাদ পড়েছে সন্দেহ হলে:
পরীক্ষক খাতা মূল্যায়নের সময় কখনও পুরো প্রশ্নপত্র উল্টে না দেখলে কিছু অংশ অমূল্যায়িত থেকে যেতে পারে। যেমন: পৃষ্ঠার পেছনের উত্তর, বা ছোট কোনো অংশ বাদ পড়া। পুনঃনিরীক্ষায় এসব ভুল ধরা পড়ে এবং সংশোধন করা হয়।

দুই পত্রের মধ্যে অস্বাভাবিক পার্থক্য: 
ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও একই বিষয়ের দুই পত্রের নম্বরের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকলে। এক্ষেত্রে নম্বর গণনায় ভুল থাকলে রেজাল্ট পরিবর্তন হবে।  

উল্লেখ্য, মাথায় রাখতে হবে খাতা চ্যালেঞ্জ মানে নতুন করে খাতা দেখা নয়—বরং বোর্ড কেবল নম্বর যোগ, স্থানান্তর ও রেকর্ড যাচাই করে। তাই এটি সন্দেহ নিরসনের প্রক্রিয়া, নিশ্চিত নম্বর বৃদ্ধির নয়। তবে যৌক্তিক সন্দেহ থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ফলাফলের ন্যায্যতা যাচাইয়ের সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।