আমি বাংলাদেশি মেয়ের ক্যারেক্টার প্লে করেছি
দ্বিতীয় সপ্তাহেও হলভর্তি দর্শক পাচ্ছে ‘কলকাতায় যত কাণ্ড’। এ সিনেমার সাফল্য নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত কাজী নওশাবা আহমেদ। অনীক দত্তের পরিচালনায় সিনেমাতে আবীর চ্যাটার্জির সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি।
টালিউডে অভিষেক প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নওশাবা বলেন, ‘সব সিনেমাই প্রথম সিনেমার মতো লাগে, এক্ষেত্রে কোনো সিনেমা যদি গণ্ডি পেরিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করার মতো কাজ হয় সেটা তো আরো ভালো লাগার। আমি এ সিনেমাতে বাংলাদেশি মেয়ের ক্যারেক্টার প্লে করেছি। আবার এটি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করাও বটে। অনীক দার সিনেমা মানেই ছিমছাম, উনার গল্প বলার ধরন খুব সাবলীল। ছবিটি যে অন্যান্য ভালো সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এত ভালো করবে এরকম প্রত্যাশা ছিল না। তবে আমার কাছে সবসময়ই মনে হয়েছে এটা আমার বাবা-মার দোয়া। এতদিন ধরে আমার যে অপেক্ষা, সেটার ফল। আমি স্রষ্টার প্রতি মাথানত করেই কৃতজ্ঞ।’
ছবির কাস্টিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনীক দা আমাকে যেভাবে কাস্টিং করেছে সেটা বলা যায় আমার চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করারই ফল। কারণ আমি তো ওখানকার কাউকে চিনতাম না। আমি বাবাকে নিয়ে যে লেখাগুলো লিখতাম সেগুলো উনি পড়তেন। সেটা পড়ে তার মনে হয়েছে নওশাবাকে এ চরিত্রের জন্য বলা যায়। তারপর উনি আমার অডিশন নিয়েছেন। এরপর আমার বাকি কাজগুলো দেখেছেন। বাবা-মার প্রতি ভালোবাসা দেখে উনি আমাকে পছন্দ করেছেন।
এজন্য মনে হয়েছে এটা বাবা-মায়েরই দোয়া। কারণ বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা এটা অন্য একটা দেশের ডিরেক্টরের কাছেও ভালো লেগেছে।’
কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে নওশাবা বলেন, ‘সিনেমাটা পূজোতে মুক্তি পেল। যেতে পারলাম না সে আক্ষেপ রাখতে চাই না। সেটি না হলেও কলকাতার অনেকেই আমাকে মেসেঞ্জারে কল করে বলছে দিদি আপনার কাজ দেখছি। ভালো লাগছে। শ্রীলেখাদি, আকাশ সেন, সোয়াতিদি, পরিচালক সৌমিত্র দস্তগীর ফোন করেছেন। জয়া আপাও টেক্সট করেছেন, শুভ কামনা জানিয়েছেন। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
দেশের মুভিতে অভিনয় নিয়ে নওশাবা জানান, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ মুভির পর আমাকে অনেক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ‘চন্দ্রাবতী কথা’, ‘ভূবন মাঝি’, ‘ছায়াবৃক্ষ’, ‘২ষ’ সব মুভির মাঝখানেই একটা গ্যাপ ছিল।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সিনেমায় এখনো কেন্দ্রীয় চরিত্রে অফার পাইনি, অথচ কলকাতার ডিরেক্টর আমাকে একবারও বলেননি যে নওশাবার ভিউ কত, বা নওশাবা কত বড় স্টার এগুলো কিন্তু উনি আমার কাছে জানতে চাননি। এ চরিত্রটি আমি ডিজার্ভ করি বলেই আমাকে নেয়া হয়েছে।’
নওশাবা আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন ট্যাগই করে দেয়া হয়েছে যে নওশাবা মানে সাপোর্টিং ক্যারেক্টার করবে। এরকম প্রেক্ষিতে আবীর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ছবিটা আমার যোগ্যতা নিয়ে যে প্রশ্ন প্রতিনিয়ত তোলা হয়, তার একটা উত্তর। ছবির সাফল্যটাও বড় উত্তর। অনীকদা এত জমকালো সিনেমার মধ্যে একটা সাধারণ মেয়ের গল্প বলতে চেয়েছেন। বস্তুত এখনকার পৃথিবীতে যে কনটেন্ট মন থেকে বানানো হয়, সেটিকেই দর্শক গ্রহণ করে। এ ছবিটা সেটিরই প্রমাণ।’
এদিকে মিউজিক্যাল পাপেট থিয়েটার ‘আগুনি’ নিয়ে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে নওশাবার। তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধা, বাক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি, শ্রবণ প্রতিবন্ধী সবাইকে নিয়েই কাজটা করেছি। এটিকে তিনি শুধু থিয়েটার না বলে হিলিং প্রসেস বলে উল্লেখ করেন। নওশাবা জানান, ঢাকায় মাত্র একটা শো হয়েছে। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।