গণ-অভ্যুত্থানের পরও বদলায়নি কিছু, হতাশ শবনম ফারিয়া
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করবেন না—নিজের ফেসবুক পোস্টে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে কিছু ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনে সরব থাকা এই অভিনয়শিল্পী প্রত্যাশা করেছিলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর দেশে বড় কিছু পরিবর্তন ঘটবে। তবে সমসাময়িক কিছু ঘটনায় হতাশ এই অভিনেত্রী। ফারিয়া তার সেই হতাশার কথা ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন।
ফেসবুক পোস্টে জুলাই আন্দোলনের সময়ের কথা মনে করে ফারিয়া লিখেছেন, ‘যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রিটিদের কাছে, মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি প্রথমে সময় চাই, বলি, ভেবে জানাব। স্বাভাবিক, সে সময় সরাসরি না করার মতো সাহস করতে পারিনি। তারাও বলে সময় নেন, আপাতত ইন্টারনেট নাই। যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে (চিত্রনায়ক) মেসেজ দেই, “তুমি কি কল পেয়েছ?” সে আমাকে জানায়, পেয়েছে এবং না করেছে। তখন আমিও সাহস পাই এবং না বলে দেই।’
ফারিয়া আরও বললেন, ‘এসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। সে সময় এটাই করার কথা, না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোনো ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত না, অদূরভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই, তাও যখন দেখি কেউ লেখে, “এরা তো ডলার খাইছে”মার্কা কল্পনিক গল্প, হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’
শবনম ফারিয়া আরও বললেন, ‘আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি, যারা মন থেকে আওয়ামী লীগ ভালোবাসে। কিন্তু জুলাই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে লাল প্রোফাইল পিকচার করেছিল। হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সে সময় উপস্থাপন করা হয়েছে, এখন বিষয়টা তেমন নাই। কিন্তু সে সময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হোন, তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না, আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যা–ই হোক।’
নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখেন না জানিয়ে ফারিয়া লিখেছেন, ‘এই স্ট্যাটাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া বন্ধ করলাম। কারণ, ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ, আমরা কখনোই ভালো হবো না। যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে, সেই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখি না।’